ফ্রিল্যান্সারের টাকা লোপাট—কাউসারের রিমান্ড নামঞ্জুর, জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ

চট্টগ্রাম নগরে ফ্রিল্যান্সারের সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতে করা ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের মামলায় অভিযুক্ত কাউসারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) তাঁকে আদালতে হাজির করে চারদিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। তবে চট্টগ্রাম চতুর্থ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সালাউদ্দিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলগেটে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।

অভিযুক্ত মো. কাউসার আহম্মদ কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার কান্দিরপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেংগাচাল আমিন বাড়ির মো. ইয়াছিনের ছেলে। তিনি নগরের ডবলমুরিং থানার দেওয়ানহাট এলাকার আশকারাবাদ পিরামিড টাওয়ারে থাকেন।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর গুলবাগ আবাসিক এলাকার আল বারাকা কুলিং কর্নার থেকে ফ্রিল্যান্সার আবু বকর সিদ্দিক ও মো. শাহাদাত হোসেনকে আটক করে ডিবির পরিদর্শক মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে একটি দল। এসময় তাদের কাছ থেকে অনলাইন জুয়ার বিভিন্ন অ্যাপস পাওয়া যায়। এছাড়া এসব অ্যাপসে ক্রিপ্টোকারেন্সি পাওয়া যায়। পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি জুয়ার মামলায় তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।

ঘটনার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, ১ মার্চ খুলশী এলাকা থেকে কাউসার আহাম্মদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে জানান, তিনি বিট কয়েনগুলো সরিয়েছেন। এসব বিট কয়েন প্রথমে শাহাদাতের অ্যাকাউন্টে এবং পরে জামিনে বেরিয়ে নিজের অ্যাকাউন্টে নেন।

আরও পড়ুন : ডিবি ইন্সপেক্টর রুহুল আমিনসহ ৭ পুলিশ বরখাস্ত—বিভাগীয় মামলার নির্দেশ 

এদিকে পরদিন ২ মার্চ কাউসারসহ তিনজনকে আসামি করে বায়েজিদ বোস্তামি থানায় মামলাটি করেন অভিযুক্ত ডিবির ইনসপেক্টর রুহুল আমিনের সহযোগী এসআই মো. আলমগীর হোসেন।

তবে ২৬ ফেব্রুয়ারি দুজনকে আটকের পর পরদিন পর্যন্ত তাদের সঙ্গে কী ঘটেছিল এর কিছুই উল্লেখ নেই অভিযোগে।

জানা গেছে, অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ছাড়া এসব বিটকয়েন হস্তান্তরযোগ্য নয়। একই কথা জানিয়েছিলেন ফ্রিল্যান্সার আবু বকর সিদ্দিকও। এছাড়া কাউসার নামের কাউকে চেনেন না বলে জানিয়েছিলেন আবু বকর সিদ্দিক।

ডিবির মামলায় উল্লেখ করা হয়, আবু বকর তাদের হেফাজতে থাকা অবস্থায় কাউসার এসব বিট কয়েন সরিয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

আবু বক্কর সিদ্দিকের মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, মনসুরাবাদ গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে থাকা অবস্থায় মাত্র ৩০ মিনিটে তার আইডি থেকে ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে ২ লাখ ৭৭ হাজার ডলার হস্তান্তর করেন রুহুল আমিন। এছাড়া সিটি ব্যাংক ও ইউসিবিএল অ্যাকাউন্ট থেকে ৫ লাখ করে মোট ১০ লাখ টাকা জাহিদ হোসেন স্বাধীনের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়।

রুহুল আমিন নিজের অপরাধ ধামাচাপা দিতে আবু বক্কর সিদ্দিক ও ফয়জুলকে ১০৩ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মোবাইল ফোনটি জব্দ দেখান। পরে আদালতের মাধ্যমে তারা জামিনে বেরিয়ে আসেন।

এরপর ২৮ ফেব্রুয়ারি অন্য একটি মোবাইল ফোন কিনে নিজের ফ্রিল্যান্সিং আইডি লগইন করে আবু বক্কর সিদ্দিক দেখতে পান গত ১৩ বছর ধরে তার আয়ের সব ডলার নিয়ে নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক রুহুল আমিন।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!