নাটকীয় ম্যাচে প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখল স্প্যানিশ জায়ান্ট

নির্ধারিত ৯০ মিনিটের আগ পর্যন্ত স্কোর লাইন ছিল এমন— ম্যানচেস্টার সিটি ১, রিয়াল মাদ্রিদ শূন্য। শেষে সময় যোগ হলেও দুই লেগে দুই গোলের অগ্রগামিতায় ম্যানসিটি ধরেই নিচ্ছিল ফাইনালের টিকিট বুঝি নিশ্চিত! কিন্তু প্রতিপক্ষটা রিয়াল মাদ্রিদ। চ্যাম্পিয়নস লিগ এলেই যারা অদম্য মনোবলে লড়ে যায় শেষ পর্যন্ত। যাদের পিছিয়ে পড়া জন্ম দেয় নাটকীয়তার।

৯০ মিনিটে একটি গোলের পর ইনজুরি সময়েই দ্বিতীয় গোল আদায় করে অবিশ্বাস্য এক ম্যাচের জন্ম দিয়েছে তারা। দুই লেগ মিলে স্কোরে সমতা চলে আসায় ম্যাচ চলে যায় এক্সট্রা টাইমে। আর সেখানেই অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেছে স্প্যানিশ জায়ান্ট।

অবশ্য অবিশ্বাস্য বললেও ভুল হবে। এবারের টুর্নামেন্টে ঠিক এভাবেই যে নিজেদের মুন্সিয়ানা দেখালো লস ব্লাঙ্কোস। বারবার পিছিয়ে পড়লেও শেষ মুহূর্তে বদলে দিয়েছে ম্যাচের ভাগ্য। তাতে বার্নাব্যুর ফিরতি লেগটা ৩-১ গোলে জিতে ফাইনালে পা রাখলো কার্লো আনচেলত্তির দল। দুই লেগ মিলে স্কোরটা ছিল (৬-৫)।

৪-৩ গোলে পিছিয়ে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ দ্বিতীয় লেগের প্রথমার্ধটা লড়েছে সমানে সমান। দুই দল বেশ কিছু সুযোগ পেয়েও সেগুলো গোলে রূপ দিতে পারেনি। নবম মিনিটে তো উত্তেজনাও ছড়ায় বেশ। লুকা মদরিচ-আইমেরিক লেপোর্তে হাতাহাতিতে জড়ান এক সময়। ওই ঘটনায় মদরিচের গালে হাতও উঠে যায় লেপোর্তের। তাতে হলুদ কার্ড দেখেন দুজনেই। এই অর্ধে রিয়ালকে গোল হজম করা থেকে বাঁচানোর কৃতিত্বও দেখান কুর্তোয়া।

তবে বিরতির পর কিছুটা খেই হারিয়ে ফেলে স্বাগতিক দল। ৭৩ মিনিটে দারুণ এক গোলে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় সিটি। সিলভা নিজের আয়ত্বে বল নিয়ে আস্তে করে বাড়িয়ে দেন ডান প্রান্তে। তারপর মাহরেজ বাম পায়ের বুলেট গতির শটে কুর্তোয়াকে পরাস্ত করে কাঁপিয়ে দেন জাল।

ম্যাচ গড়াতে গড়াতে শেষ পর্যায়ে চলে আসায় তখনও ভাবা যায়নি, চিত্রনাট্য-টা এভাবেই লিখে ফেলবেন বেনজিমারা। ৯০ মিনিটে আসে রিয়ালের কাঙ্ক্ষিত গোল। বাম প্রান্তে সতীর্থের বাতাসে ভাসানো বলে লাফিয়ে ডান দিকে বাড়িয়ে দেন বেনজিমা। সেখান থেকে আলতো টোকায় জাল কাঁপান রদ্রিগো।

এই গোলের সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচে প্রাণ ফেরানোর রসদও পেয়ে যায় তারা। এক মিনিট বাদে দুই লেগের স্কোরে ফেরায় সমতা ৫-৫। আসেনসিওর মহাগুরুত্বপূর্ণ পাস থেকে লাফিয়ে হেড করে জোড়া গোল করেন রদ্রিগো।

খেলা এক্সট্রা টাইমে গড়ালে ম্যাচের ভাগ্যটা গড়ে দেন বেনজিমা। বিপজ্জনক অঞ্চলে ফরাসি তারকাকে ফেলে দিলে পেনাল্টি পায় স্বাগতিকরা। ৯৫ মিনিটে স্পট কিক থেকে গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে নেন বেনজিমা। তাতে শেষ ৫ চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচে এই ফরাসির গোল দাঁড়ালো দশে।

রিয়াল মাদ্রিদের অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে পরে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি সিটি। এক্সট্রা টাইমের প্রথমার্ধেই নিশ্চিত হয়ে যায় ২০১৮ সালের পর আবারও মুখোমুখি হচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ-লিভারপুল। সেবার রেডদের হারিয়েই রেকর্ড ১৩তম বারের মতো শিরোপা ঘরে তুলেছিল লস ব্লাঙ্কোস।

এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!