‘শঙ্কা’ পেছনে ফেলে আনন্দ-উৎসবে পর্দা নামল দুর্গোৎসবের, পতেঙ্গায় জনস্রোত

প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে পর্দা নামল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ৫ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসবের। গত ১ অক্টোবর (শনিবার) ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছিল হিন্দুদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব।

এবার দেবী দুর্গা গজে চড়ে কৈলাস থেকে মর্ত্যলোকে আসে। এর ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, ঝড়-বৃষ্টি এবং শস্য ও ফসল উৎপাদন বাড়বে। দশমীর দিন বির্সজনের মাধ্যমে মা কৈলাসে (স্বর্গে) ফিরে গেছেন নৌকায় চড়ে। এর ফলে জগতের কল্যাণ সাধিত হবে।

এদিকে প্রতিমা বিসর্জন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে মহানগর পূজা পরিষদের সহযোগিতায় সিটি করপোরেশন পতেঙ্গা সৈকতে অস্থায়ী প্যান্ডেল তৈরি, আলোকসজ্জা, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ছিল ব্যাপক উপস্থিতি। ৩০০ পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি র‌্যাব, কোস্টগার্ড, ডিবি, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

আরও পড়ুন : সপ্তমীতেই মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড়, চেনা রূপে ফিরল দুর্গাপূজা

পতেঙ্গা সৈকত ছাড়াও নগরের ফিরিঙ্গিবাজার, কালুরঘাট, কাট্টলীসহ প্রায় ৯টি স্থানে প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করা হয়। সেখানেও ছিল ব্যাপক প্রস্তুতি।

বিসর্জন উপলক্ষে পতেঙ্গা সৈকতে সকাল থেকে ভিড় জমাতে শুরু করে দর্শনার্থীরা। দুপুর গড়াতেই লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে পতেঙ্গা সৈকত। বেলা ১২টার দিকে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। বেলা বাড়তেই পতেঙ্গা সৈকতে বাড়তে থাকে সারি সারি ট্রাকের লাইন। এসময় দায়িত্বরত স্বেচ্ছাসেবকরাও ছিল বেশ তৎপর।

অন্যদিকে আজ (বুধবার) বিজয়া দশমীতে পূজামণ্ডপগুলোতে আনন্দের পাশাপাশি ছিল বিদায়ের বিষণ্নতা। সকালে দশমীর পূজা শেষে পুষ্পাঞ্জলি ও শান্তিজল গ্রহণের মাধ্যমে শেষ হয় দর্পণ বিসর্জন।

এরপর বিবাহিত নারীরা পরিবারের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গার কপাল-চরণে তেল-সিঁদুর ও মুখে পান-মিষ্টি দেন। এছাড়া শিক্ষার্থীরা ১০৮ বার লেখা ‘শ্রী শ্রী মা দুর্গা’ চিরকুট দেবীর হাতে গুজে দেয়। পরে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠে ছোট-বড় সবাই। এসব আনন্দের স্মৃতি মুঠোফোনে তুলে নিতে ভুল করেনি অনেকেই। আবার কেউ কেউ সেসব ছবি পোস্ট করেছে নিজের ফেসবুকে।

এদিকে প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে আজ (বুধবার) পতেঙ্গা সৈকতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মহানগর পূজা পরিষদ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহানগর পূজা পরিষদ সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য।

আরও পড়ুন : দুর্গাপূজা—শঙ্কায় চট্টগ্রামের হিন্দু নেতারা, জামিনে বেরিয়ে গেছে ‘সেই চেনামুখগুলো’

যোগাযোগ করা হলে মহানগর পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রায় ৭৫টি প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। আজ (বুধবার) বেলা ১২টা থেকে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। পতেঙ্গা সৈকত ছাড়াও নগরের ফিরিঙ্গিবাজার, কালুরঘাট, কাট্টলীসহ প্রায় ৯ টি স্থানে প্রতিমা বিসর্জন চলছে। আশা করছি, রাত ৮টার মধ্যে বিসর্জন সম্পন্ন হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, এবার নগরের ২৮৩টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১২০-১৩০টি প্রতিমা পতেঙ্গা সৈকতে এবং বাকিগুলো অন্যান্য জায়গায় বিসর্জন দেওয়া হবে। উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন চলছে।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!