ঘোড়ায় এলো দুর্গা—ফিরবেও ঘোড়ায়, বাড়তে পারে রাজনৈতিক অস্থিরতা

বর্ণিল আয়োজনে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। পাঁচদিনের এ উৎসবের আজ (শনিবার) সপ্তমী। গতকাল (শুক্রবার) সন্ধ্যায় হয় ষষ্ঠী পূজা।

এদিকে পুজো ঘিরে নগরের পূজামণ্ডপগুলো নানা ধর্মীয় কর্মসূচি নিয়েছে। দুর্গোৎসব চলাকালে এসব পূজামণ্ডপে প্রতিদিনই অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও ভোগ-আরতি হবে। এছাড়া স্বেচ্ছায় রক্তদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভাসহ আরও নানা কর্মসূচি রাখা হয়েছে।

এবার কৈলাস থেকে ঘোড়ায় চড়ে মর্ত্যে এসেছেন দেবী দুর্গা। তার সঙ্গী হয়ে এসেছেন গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী ও সরস্বতী। আগামী মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে ফিরবেন ঘোড়ায় চড়ে। দেবী দুর্গার আসা-যাওয়ার ফল হবে অস্থিরতা (ছত্রভঙ্গস্তুরঙ্গমে)। অর্থাৎ ঘোড়ায় আগমন ও গমনে সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংসারিক ক্ষেত্রেও অস্থিরতা প্রকাশ পাবে। যেমন- রাজনৈতিক উত্থান-পতন, সামাজিক স্তরে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, দুর্ঘটনা, অপমৃত্যু ইত্যাদির প্রভাব বাড়বে।

দেবী দুর্গার আগমন ও গমনের ব্যাপারে শাস্ত্রে বলা হয়েছে— ‘রবৌ চন্দ্রে গজারূঢ়া, ঘোটকে শনি ভৌময়োঃ, গুরৌ শুক্রে চ দোলায়াং নৌকায়াং বুধবাসরে।’ সপ্তমীর দিন যদি রোববার এবং সোমবার হয়, তাহলে দুর্গার আগমন ও গমন হবে গজে। ফল— “গজে চ জলদা দেবী শস্যপুর্ণা বসুন্ধরা’। ঠিক এই রকমই শনিবার ও মঙ্গলবারে দুর্গার আগমন ও গমন হলে, ঘোটকের প্রভাব থাকবে। যদি বুধবারে দেবী দুর্গার আগমন ও গমন হয়, তাহলে তিনি আসবেন এবং যাবেন নৌকায়। ফল— “শস্যবৃদ্ধিস্তুথাজলম’। আবার দুর্গার আগমন ও গমন যদি বৃহস্পতি ও শুক্রবারে হয় তাহলে তিনি দোলায় আসবেন এবং যাবেন। ফল- “দোলায়াং মরকং ভবেৎ।

আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে এবার ২৯৩ মণ্ডপে দুর্গাপূজা, ৪ দিনের ছুটিসহ ১৫ দাবি

পণ্ডিত রাজ কুমার আচার্য্য (রাজু) বলেন, শনিবার ও মঙ্গলবারে দুর্গার আগমন ও গমন হলে, ঘোটকের (ঘোড়া) প্রভাব থাকবে। এবার দুর্গার আগমন ও গমন ঘোটকে। ফলে রাজনৈতিক উত্থান-পতন, সামাজিক স্তরে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, দুর্ঘটনা, অপমৃত্যু ইত্যাদির প্রভাব বাড়তে পারে।

এবার বন্দর নগরী চট্টগ্রামের ১৬ থানায় ২৯৩ মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুর্গাপূজা। প্রতিটি মণ্ডপেই বর্ণিল সাজ। থিমভিত্তিক বিভিন্ন সাজে সাজানো হয়েছে পূজামণ্ডপগুলো। রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

আজ সপ্তমীর সকাল থেকেই পূজার্থীরা ভিড় জমিয়েছেন মণ্ডপে মণ্ডপে। পূজা-অর্চনা শেষে কৃপা প্রার্থনায় দেবীর শ্রীচরণে দেন পুষ্পাঞ্জলি। দুপুরে বিভিন্ন মণ্ডপে ভক্তদের বিতরণ করা হবে মহাপ্রসাদ। সন্ধ্যায় আরতি, সাংস্কৃতিক, নৃত্যানুষ্ঠানসহ রয়েছে নানা কর্মসূচি।

এদিকে ষষ্ঠীর রাতে দেবী দুর্গার দর্শনে নগরের বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে ঢল নামে দর্শনার্থীদের। বিশেষ করে জেএমসেন হল, রাজাপুকুর লেইন, চেরাগী পাহার, হাজারী লেইন, টেরীবাজার ও নবগ্রহবাড়িতে কম বয়সীদের উপস্থিতি ছিল বেশি।

আজ সপ্তমীতেও মণ্ডপে মণ্ডপে ছুটে বেড়াবেন ভক্ত ও দর্শনার্থীরা। আগামীকাল (রোববার) অনুষ্ঠিত হবে মহাষ্টমী ও কুমারী পূজা।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!