দাগি আসামির মতো কোমরে রশি বেঁধে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে আদালতে নিল পুলিশ

কক্সবাজারের পেকুয়ায় মারামারির মামলায় গ্রেপ্তার হামিম মো. ফাহিম (২৫) নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে কোমরে রশি বেঁধে আদালতে তোলার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে সমালোচনা ঝড় বইছে।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কোমরে রশি ও হাতকড়া পরিয়ে ওই ছাত্রকে আদালতে তোলা হয়।

এদিকে এ ঘটনাকে বেআইনি ও অমানবিক আখ্যা দিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) চকরিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মিফতাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, দাগি আসামি ছাড়া কাউকে কোমরে রশি বাঁধা বা ডাণ্ডাবেড়ি পরানো যাবে না। একজন ছাত্রকে কোমরে রশি বাঁধা আইনসম্মত নয়, অমানবিকও বটে।

হামিম মো. ফাহিম সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির এলএলবির শিক্ষার্থী। তিনি পেকুয়া সদর ইউনিয়নের শেখের কিল্লাঘোনা গ্রামের বাসিন্দা মো. সাহাব উদ্দিনের ছেলে। পেকুয়া সদরে একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করেন ফাহিম।

পুলিশ ও ফাহিমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মারামারি মামলার পরোয়ানায় গত শনিবার রাতে ফাহিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

রোববার পেকুয়া থানা-পুলিশ সদস্যরা কোমরে রশি বেঁধে ও হাতকড়া পরিয়ে তাঁকে আদালতে হাজির করে। এসময় আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

হামিম মো. ফাহিমের বাবা শাহাব উদ্দিন বলেন, গত ডিসেম্বরের শুরুতে আমার ছোট ছেলের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ৯৯৯-এ ফোন করা হলে পুলিশ এসে আমার ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়। পরে ফাহিম বাদী হয়ে মামলা করে। এরপর প্রতিপক্ষের লোক আদালতে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মামলা করলে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট হয়। কিন্তু তা কেউ জানত না। সে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ও একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করে। কিন্তু তাকে এভাবে দাগি আসামির মতো কোমরে রশি বেঁধে আদালতে নেওয়া দৃষ্টিকটু।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রইস উদ্দিন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, একটি মামলায় ফাহিমের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। আমরা শুধু ওয়ারেন্ট তামিল করেছি। আদালতে পাঠানোর বিষয়ে কিছু জানা নেই।

যোগাযোগ করা হলে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াছ বলেন, নিরাপত্তা বলয়ে আসামিকে থানা থেকে আদালতে নেওয়া হয়েছে।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) এমএম রকীব উর রাজা আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আসামি গ্রেপ্তার ও কোমরে রশি বেঁধে আদালতে পাঠানোর বিষয় আমাকে কেউ জানায়নি। ছবিটি আমিও দেখেছি। খবর নিচ্ছি।

এমকেডি/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!