জব্বারের বলীখেলার ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন জীবন বলী

ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলার ১১৩তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন চকরিয়ার জীবন বলী। যার পুরো নাম তরিকুল ইসলাম জীবন। খেলায় তিনি কুমিল্লার শাহজালাল বলীকে পরাজিত করেন। এর আগে ১০৯তম আসরের চ্যাম্পিয়ন হন জীবন।

সোমবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় লালদীঘি সংলগ্ন জেলা পরিষদ মার্কেট চত্বরে অস্থায়ী বালুর মঞ্চে বলীখেলা শুরু হয়। এবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ৭০ জন বলী খেলায় অংশ নেন।

এদিকে বলীখেলাকে ঘিরে নগরের লালদীঘি এলাকার চারপাশে বসেছে তিনদিনের বৈশাখী মেলা। বলীখেলার জন্য লালদীঘি পাড়ের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের গোলচত্বরে তৈরি করা হয় ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২০ ফুট প্রস্থের অস্থায়ী বালুর মঞ্চ। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় বলীখেলা।

আরও পড়ুন: জব্বারের বলীখেলা—চট্টগ্রামের যেসব সড়ক বন্ধ থাকবে

ফাইনাল খেলার শুরুতেই দর্শকরা স্লোগান স্লোগানে মুখরিত করে তুলে বলী প্রাঙ্গণ। এর আগে প্রথম রাউন্ড, কোয়ার্টার ফাইনাল (চ্যালেঞ্জিং বাউট), সেমিফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

ফাইনাল খেলায় জীবন বলী বেশ কয়েকবার শাহজালাল বলীকে ধরাশায়ী করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলা এ খেলায় কেউ কাউকে ধরাশয়ী করতে না পারায় পয়েন্ট ভিত্তিতে চকরিয়ায় তারিকুল ইসলাম জীবনকে বিজয়ী ঘোষণা করেন রেফারি আব্দুল মালেক। জীবন তিন পয়েন্ট পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হন।

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর জীবন বলী গণমাধ্যমেকে বলেন, ‘দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হয়েছে। আমি খুব খুশি। আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাই।’

এদিকে প্রথম সেমিফাইনালে মমিনকে হারিয়ে তরিকুল ইসলাম জীবন ফাইনালে ওঠেন। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে সুজন চাকমাকে হারিয়ে শাহাজালাল বলী ফাইনালে ওঠেন।

খেলা পরিচালনায় ছিলেন সাবেক কমিশনার আবদুল মালেকসহ চারজন। এবারের চ্যাম্পিয়নকে দেওয়া হয়েছে নগদ ২৫ হাজার টাকা ও ট্রফি। রানারআপকে দেওয়া হয়েছে ১৫ হাজার টাকা।

এর আগে দুপুর ৩টার দিকে বলীখেলা উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।

আরও পড়ুন: ‘দুসংবাদ চট্টগ্রাম’—এবারও হচ্ছে না জব্বারের বলীখেলা

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শ্যামল কুমার নাথ, শামসুল আলম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম, কোতোয়ালী জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মুজাহিদুল ইসলাম।

খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপের হাতে ট্রফি তুলে দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।

জানা যায়, ১৯০৯ সালে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে লড়তে দেশের তরুণ যুবকদের শারীরিকভাবে তৈরি করতে এই বলীখেলার প্রচলন করেছিলেন চট্টগ্রামের বদরপাতি এলাকার বাসিন্দা আবদুল জব্বার।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর পৃষ্ঠপোষকতায় ঐতিহাসিক লালদীঘির চত্বরে ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলার ১১৩তম আসরের আয়োজন করা হয়। এর আগে করোনার কারণে দুবছর বলীখেলা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি।

আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!