চসিক ‘প্রশাসক’ সুজনের অনিয়মের ‘খোঁজ’—প্রতিবেদন ১৫ দিনের মধ্যেই

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের ১৮০ দিনে বরাদ্দে অনিয়মের খোঁজ নিতে গিয়ে তদন্তের মাঠে চলে গেছে আরও ১০০ দিন। তদন্তে ধীরগতি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিলেও হতাশ নন চসিকের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা।

তাঁরা বলেছেন, আবহাওয়ার বৈরিতার কারণে তদন্তের গতি কমলেও আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। এ প্রতিবেদনকে পুরোপুরি নিরপেক্ষতার দৃষ্টিতে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে—যেন নগরবাসীর সুফল দেখতে পান। এছাড়া সিটি করপোরেশনের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতাও যেন মানুষের সামনে পরিষ্কারভাবে উঠে আসে, এনিয়ে কাজ করছে তদন্ত কমিটি।

তদন্তে অস্থায়ী ভাড়া—বরাদ্দে স্থায়ী অবকাঠামো বানানো, নালার ওপর হাঁটাচলার পথে দোকান বরাদ্দের অনিয়মের চিত্রও উঠে আসবে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ‘শোক দিবসের’ আলোচনায় দেখা মেলেনি সুজন—ছালামের

১৮০ দিন মেয়াদকালে সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম তদন্তে চলতি বছরের ২২ মে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে চসিক।

এ তদন্ত কমিটিতে চসিকের প্যানেল মেয়র-২ ও বাগমনিরাম ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. গিয়াস উদ্দিনকে আহ্বায়ক এবং প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলামকে সদস্য সচিব করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আইন কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব কুমার দাশ ও সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন।

চসিক সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ৬ আগস্ট চসিক প্রশাসকের দায়িত্ব নেন খোরশেদ আলম সুজন। ১৮০ দিন দায়িত্ব পালন শেষে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি তাঁর মেয়াদ শেষ হয়। ওই সময়ে নগরের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ১২টি জায়গা ১০ জনকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। বরাদ্দ দেওয়া জায়গার মোট পরিমাণ ১৭ হাজার ১৮৮ বর্গফুট।

নগরের গুরুত্বপূর্ণ ও বাণিজ্যিক এলাকার এসব জায়গা প্রতি বর্গফুট সর্বনিম্ন এক টাকা ৮০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার ৮৫০ টাকায় মাসিক ভাড়া ধার্য করা হয়। এরমধ্যেই ড্রেন ও নালার স্ল্যাবের ওপরে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে জনচলাচলের পথে বাঁধা তৈরির অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক চসিকের প্যানেল মেয়র-২ ও বাগমনিরাম ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. গিয়াস উদ্দিন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, মাঠ পর্যায়ে তদন্তের কাজ চলছে। নিয়মের ভেতরে যেসব প্রকল্প রয়েছে, তাও উঠে আসবে তদন্তে প্রতিবেদনে। আর যেসব প্রকল্পে অনিয়ম রয়েছে, তদন্তে তাও তুলে ধরা হবে। এসব প্রকল্প চসিকের বিধি অনুসারে বাতিলের সুপারিশ করবে তদন্ত কমিটি।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন চলতি মাসের ১৬ তারিখের মধ্যেই জমা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এনিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

আরও পড়ুন: ‘ক্ষমতার জোর’—৪ কোটি টাকার জমি ৮ হাজারে ভাড়ায় লাগালেন চসিক প্রশাসক সুজন

গিয়াস উদ্দিন আরও বলেন, প্রতিবেদনে সবকিছুই উঠে আসবে। আগে কিছু বলাটা সমুচিত নয়। সঙ্গতি আর অসঙ্গতি সবই নিরপেক্ষতার সঙ্গে পুঙ্খানুপুঙ্খ উঠে আসবে তদন্ত প্রতিবেদনে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত চসিকের বর্তমান পর্ষদের তৃতীয় সাধারণ সভায় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!