চট্টগ্রামে স্কুল-কলেজ ঘিরে শরবতের রমরমা বাণিজ্য, হাসপাতালে ভিড়

সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও এখন তীব্র তাপদাহ। গরমের কারণে বেড়েছে শরবতের চাহিদা। নগরের প্রায় সব স্কুল-কলেজের আশপাশে এখন দেখা যায় ভাসমান শরবত বিক্রির দৃশ্য।

এই গরমে কিছুটা স্বস্তি মেটাতে শরবতের দোকানে ভিড় করছেন শিক্ষার্থীরা। গরম আবহাওয়ায় বেড়েছে শরবতের বিক্রিও। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব শরবত বানানো হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর পানি ও বরফে। এতে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গরমে ভাসমান শরবত খেয়ে অসুস্থ হচ্ছেন অনেকে শিক্ষার্থী। তাদের বেশিরভাগই আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়রিয়ায়।

একদিকে অতিরিক্ত গরমের সঙ্গে তীব্র লোডশেডিংয়ে ক্লাস করাও কঠিন হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীদের। গরমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করলেও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ বন্ধের কোনো নির্দেশনা এখনও আসেনি। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের স্কুল-কলেজে কমছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার। স্কুলে এলেও দুয়েকটি ক্লাস করেই ছুটির আবেদন করছেন অনেক শিক্ষার্থী।

এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) ঘুরে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ড ও মেডিসিন ওয়ার্ডে প্রতিদিন বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। চিকিৎসকরা বলছেন, এদের বেশিরভাগই পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত। তীব্র গরমে বাইরের ভাসমান দোকানের শরবত খেয়ে নানান রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতালের শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. একেএম রেজাউল করিম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমাদের শিশু বিভাগে শয্যা আছে ১০০টি। কিন্তু এখন রোগীর চাপ অত্যাধিক। প্রতিদিন রোগী আসছে। বেশিরভাগই জ্বর, ডায়রিয়া, শ্বাস যন্ত্রের প্রদাহ ও মস্তিষ্কের প্রদাহসহ নানান রোগে আক্রান্ত। উচ্চ তাপমাত্রার কারণে শিশুরা দ্রুত অসুস্থ হচ্ছেন।

ডা. রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষার্থীরা গরমে বিদ্যালয়ে যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই বাসা থেকে ফুটানো পানি নিয়ে যেতে হবে। বারবার পানি পান করতে হবে। মুখ ধুতে হবে। বাইরের ভাজাপোড়া, বাসি খাবার, বরফগলা শরবত এসব সম্পূর্ণ পরিহার করতে হবে। না হয় শিশুরা আরো বড় রকমের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়বে। গরমে শিশুদের বেশি বেশি তরল খাবার খেতে দিতে হবে।

যোগাযোগ করা হলে ডা. খাস্তগীর স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সাহেদা আক্তার আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের সচেতন করছি গরমে যেন বাইরের খাবার না খায়। আমরা সেজন্য আমাদের মেইন গেইট লাগিয়ে রাখি।

বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফুল হাসান চৌধুরী বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীদের বাইরের জুস, শরবত না খেতে নির্দেশনা দেওয়া আছে। অতিরিক্ত গরমে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমেছে। আমাদের বিদ্যালয়ে জেনারেটর রয়েছে। বিদ্যুৎ গেলে জেনারেটর চালাচ্ছি যেন অসুবিধা না হয়৷

একই প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মু. সিরাজুল ইসলাম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পরীক্ষা শুরু করেছি। ষষ্ঠ–সপ্তম শ্রেণির পরীক্ষাগুলো দুপুরের পর দিয়েছি। সকালে দিয়েছি অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির পরীক্ষা। আমাদের স্কুলে পর্যাপ্ত বনায়ন রয়েছে৷ মাঠে নামা নিষেধ এমন একটি নোটিশ দিয়েছি। বাচ্চারা যেন বাইরের খাবার কোনোভাবেই না খায় সেটি আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি এবং নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছি।

এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!