চট্টগ্রামে শতবর্ষী গাছ কেটে র‌্যাম্প নির্মাণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে আন্দোলনের ঘোষণা

টাইগারপাস-সিআরবির শতবর্ষী গাছ ও সড়ক ধ্বংস করে র‌্যাম্প নির্মাণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজ। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) দ্রুত এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। সোমবার (১ এপ্রিল) বিকেলে নগরের টাইগারপাস মোড়ে শতবর্ষী গাছের নিচে এ আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, যদি র‌্যাম্প করতে হয় অনেক জায়গা আছে, এখানে গাছ কেটে কেন করতে হবে? এখানে কোনো গাছ কাটা চলবে না। প্রকৃতি অক্ষুন্ন রেখে যেকোনো কিছু করতে পারে, তারা সেটা করুক।

অধ্যাপক মো. ইদ্রিস আলী বলেন, যারা ৬ কিলোমিটার রাস্তা করতে ১৮টি গাছ কাটে তারা মানুষ নামের শকুন। জলাবদ্ধতা নিরসনে তাদের দারুণ দক্ষতা আমরা দেখেছি। যারা সিআরবি ধ্বংস করতে পারেনি তারা এখন সিআরবির প্রতিবেশ ধ্বংস করতে চায়। তারা বলছে মাত্র ৪৬টি গাছ কাটা হবে। এটা কেমন মুর্খতা। তারা শতবর্ষী গাছ কেটে চারা লাগাতে চায়। ধিক্কার জানানোর ভাষা আমাদের নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাগ্রত আছেন। তরুণদের নিয়ে আমরা আন্দোলন করে সিডিএকে সরে আসতে বাধ্য করব।

আরও পড়ুন : ‘ক্ষোভে ফুঁসছে চট্টগ্রাম’ সিআরবির বুকে উঠছে কংক্রিটের উঁচু ভবন

খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী কমিটির সভাপতি ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই সড়ক শুধু চট্টগ্রামের নয়। দেশের ও বিশ্ব প্রকৃতির সম্পদ। সিডিএর লোকজন যা বলছেন তা হঠকারিতা। সিআরবির মাটি কামড়ে আমরা পড়েছিলাম। এখানে এক টুকরো মাটিও কাটতে দেওয়া হবে না। নয়ত আমরা প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে এই সম্পদ রক্ষা করব। অবিলম্বে সিডিএ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের ঘোষণা দিক।

সভাপতির বক্তব্যে নাট্যজন ও সাংবাদিক প্রদীপ দেওয়ানজী বলেন, এত বিকল্প থাকতে গাছ কেটে আর দ্বিতল রাস্তা ধংস করে কেন র‌্যাম্প করতে হবে সেটা বোধগম্য নয়। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দ্রুত বিকল্প স্থানে র‌্যাম্প করার ঘোষণা না দিলে লাগাতার আন্দোলন করে টাইগারপাস-সিআরবির এই সড়ক ও গাছ রক্ষা করব।

পিপলস ভয়েস সভাপতি শরীফ চৌহান বলেন, আমরা বারবার চট্টগ্রামের পরিবেশ ও ইতিহাস ঐতিহ্য রক্ষায় রাস্তায় নামি। সিআরবি রক্ষার আন্দোলনে আমরা সফল হয়েছি। গাছ কাটতে আবার পরিকল্পনা করছে। আমরা কেউ উন্নয়নবিরোধী নই। এই র‌্যাম্প এখানে কেন? সিআরবিতে একই ষড়যন্ত্র হয়েছিল। আন্দোলন করে তা প্রতিহত করেছি। এখনই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। না হলে আন্দোলন-সংগ্রাম করে সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য করব।

সাংবাদিক প্রীতম দাশের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি চৌধুরী ফরিদ, লেখিকা মোহছেনা ঝর্না, সাংবাদিক ঋত্বিক নয়ন, নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আশরাফুল ইসলাম, সাংবাদিক সারোয়ার আমিন বাবু, রাজনীতিবিদ সাজ্জাদ হোসেন, খাল নদী রক্ষা কমিটির আলীউর রহমান, অধ্যাপক সুপ্রতীম বড়ুয়া, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম মুন্না, পিপলস ভয়েসের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মো. আতিকুর রহমান, যুব নেতা শিবু চৌধুরী, সাংবাদিক মিনহাজুল ইসলাম, কায়সার চৌধুরী ও সাংস্কৃতিক সংগঠক মোরশেদুল আলম।

সমাবেশে প্রতিবাদী ছড়া পাঠ করেন উৎপল বড়ুয়া।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!