যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজকে জিম্মি করে ছিনতাইয়ের মামলার রায়ের পর উচ্চ আদালতে আপিল করেও লাভ হয়নি তিন দণ্ডিতের। খাটতে হবে সাজা। উচ্চ আদালতের নির্দেশে নিম্ন আদালত রায় বহাল রাখেন। আত্মসমর্পণ করলে তাদের সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠান আদালত।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মু. আবদুল হালিমের আদালত শুনানি শেষে তাদের কারাগারে পাঠান।
দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি হলেন- জিয়াউল হক জিয়া, সোহেল মান্না ও মো. ইসমাইল।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী হানিফ বলেন, তৎকালীন মৌলভী বাজার যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ কাজী আব্দুল হাসিব মো. সাঈদকে জিম্মি করে ছিনতায়ের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় তৎকালীন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তিন আসামিকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করলে আদালত তা যথাযথ রায় বলে গণ্য করে নিম্ন আদালতকে রায় কার্যকরের নির্দেশ দেন। আসামিরা আদালতে উপস্থিত হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠান।
এর আগে উচ্চ আদালতের নির্দেশে চট্টগ্রাম তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দিন ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে রায় বহাল রেখে আসামিদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী নেছার আহমেদ।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি নগরের মেহেদীবাগ এলাকায় ভাড়া করা অটোরিকশায় দুআসামি কাজী আব্দুল হাসিব মো. সাঈদকে জিম্মি করে বাকলিয়া সৈয়দশাহ এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে এ বিচারক থেকে মোবাইল, ওয়ালেট, চেকসহ নানা মূল্যবান জিনিস রেখে দিয়ে পঠিয়ে দেয়। একইদিন তাদের কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে এ বিচারক বাকলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় বাকলিয়া থানার এসআই মো. ইলিয়াছ মামলা তদন্ত শেষে একই বছরের ৮ মে আদালতে তিনজনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন।
২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় প্রকাশ করেন তৎকালীন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। কিন্তু আসামিরা রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নগরের হালিশহরের মোল্লাপাড়ার একটি বাসায় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ কাজী আব্দুল হাসিব মো. সাঈদের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ওই সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কাজী আবদুল হাসিব মোহাম্মদ সাঈদ দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম আদালতেও দায়িত্ব পালন করেন।
আরএস/এসআই