চট্টগ্রামে ট্রিপল মার্ডার—২ খুনির ফাঁসি

জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে চট্টগ্রাম নগরে চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডারের ঘটনার দুদশক পর দুআসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে দুলাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) চট্টগ্রাম প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. কামাল হোসেন শিকদার এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার কুলগাঁও বালুচড়া এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে আবুল কাশেম প্রকাশ জামাই কাশেম এবং একই এলাকার রহমত আলী হাজি বাড়ির মৃত আবুল বশরের ছেলে ইউসুফ প্রকাশ বাইট্টা ইউসুফ।

বিষয়টি আলোকিত চট্টগ্রামকে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পিপি নোমান চৌধুরী। তিনি বলেন, রায় ঘোষণার পর আসামিদের সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, নগরের বায়েজিদ থানার পাহাড়তলী মোজার ৩৬ শতক একটি জমি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। সেই বিরোধের জেরে ২০০৪ সালের ২৯ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে একই থানার বালুচড়া এলাকার তিন ভাই-বোনকে গুলি করে খুন করা হয়। নিহতরা সৈয়দুর রহমানের সন্তান।

আরও পড়ুন : সাতকানিয়ার যৌতুকলোভী খুনি যুবককে ঝুলতে হবে ফাঁসিতে

মামলার বর্ণনায় বাদী আয়েশা আক্তার শিল্পী জানান, রাতের অন্ধকারে আসামি ফয়েজ মুন্না, (র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত) গিট্টু নাছিরসহ (র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত) মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুআসামি বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এসময় তার ননদ মনোয়ারা বেগম মিনু আসামিদের দেখে চিৎকার করলে ফয়েন মুন্না তার বুকে গুলি করে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে পড়ে যান।

এসময় তার ভাসুর আলমগীর ঘর থেকে বের হলে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইউসুফ বলেন, শালাকে শেষ করে দে। আদেশ পাওয়ামাত্র ফয়েজ মুন্না আলমগীরের পেটে গুলি করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর বাদীর স্বামী সাইফুল ইসলাম পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে জামাই কাশেম বলেন, শালাকে জানে মেরে দে। এরপর সাইফুলের কপালে, বুকে, পেটে, পিঠে ও হাতে গুলি করে গিট্টু নাছির।

ঘটনার পর আসামিরা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মিনু ও সাইফুলকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। আলমগীরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে একই বছরের ১৯ জুলাই আলমগীরও মারা যান।

এরপর এ ঘটনায় সাইফুল ইসলামের স্ত্রী আয়েশা আক্তার শিল্পী বাদী হয়ে বায়েজিদ থানায় মামলা করেন। ২০০৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মামলা তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দেন বায়েজিদ থানার তৎকালীন ওসি মো. আমিনুল ইসলাম। ২০১৭ সালের ৫ জুলাই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুআসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত। এ মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

প্রসঙ্গত, মামলার অপর দুআসামি চট্টগ্রামের কুখ্যাত সন্ত্রাসী ফয়েজ মুন্না ও গিট্টু নাছির র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ায় চার্জ গঠনের সময় তাদের দায়মুক্তি দেন আদালত।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!