চট্টগ্রামে ছাত্রীকে হোটেলে তুলে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা, সেই ওসি জেলে

নগরে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবা থানার তৎকালীন ওসি জিএম মিজানুর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

রোববার (৩০ এপ্রিল) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। আগামী ১০ মে রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. কফিল উদ্দিন। তিনি বলেন, ইস্পাহানী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় আজ যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ধার্য ছিল। আসামি জিএম মিজানুর রহমান ও কলেজ ছাত্রীর উপস্থিতিতে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়। এ সময় আসামিপক্ষ জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা নামঞ্জুর করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ১২ জুলাই নগরের ফয়’স লেক এলাকায় বন্ধুর সঙ্গে বেড়ানোর সময় রিকশা থামিয়ে ইস্পাহানী স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রীসহ তার বন্ধুকে কসবা থানার তৎকালীন ওসি মিজানুর রহমান নিজ গাড়িতে তুলে চকবাজারের হোটেল আল আকাবায় নিয়ে আসেন। সেখানে রাতে সেই ছাত্রীকে একটি রুমে আটকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন তিনি। এসময় ওই কলেজছাত্রী টয়লেটে ঢুকে জানালার কাঁচ ভেঙে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে রুম থেকে বেরিয়ে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনার পর একই বছরের ১৬ জুলাই ভিকটিমের বাবা হুমায়ন কবির বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় ওসি মিজান, দুই হোটেল কর্মচারীসহ তিনজনকে আসামি করে দুটি মামলা করেন।

হুমায়ন কবিরের করা দুটি মামলার মধ্যে একটি ছিল নারী নির্যাতন দমন আইনের ৭/৯ (৪)-খ ধারায়। অন্যটি মেয়েটিকে জোর করে তুলে নিয়ে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করানোর অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪২০, ১৭০ ও ৩৮৬ ধারায়।

এরপর প্রায় সাড়ে তিন মাস পলাতক থাকার পর ওসি মিজান একই বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে হাইকোর্টের চার সপ্তাহের একটি জামিননামা নিয়ে হাজির হন। আদালত জামিন আদেশ আমলে নিয়ে তাকে ১৩ নভেম্বর আত্মসমর্পণের আদেশ দেন। আত্মসমর্পণের পর ওইদিন আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠান।

প্রথম মামলায় ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর ওসি মিজানসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ২০১২ সালের ১ মার্চ প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের দিন নির্ধারণ করা হয়। সেদিন শ্লীলতাহানির মামলায় কারাগারে থাকা ওসি মিজানুর রহমানের জামিন আবেদনও নামঞ্জুর করেন একই বিচারক। ওই মামলায় আটজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, ওসি মিজানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠার পরই তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!