চট্টগ্রামে চান্দগাঁওয়ে রেললাইন ঘেঁষা বস্তিতে ‘হিজড়া সেজে’ মাদক—জুয়ার হাট, নিয়ন্ত্রণে ৫ যুবক

নগরের চাঁন্দগাও থানার মৌলভীবাজার এলাকার রেললাইনের পাশের বস্তিগুলো পরিণত হয়েছে অপরাধের অভয়ারণ্যে। এখানে প্রকাশ্যে বসে জুয়ার আসর। চলে জমজমাট মাদক বেচাকেনা এবং সেবনও! এখানকার অন্তত সাত স্পটে মাদক ও জুয়া নিয়ন্ত্রণ করছে পাঁচজনের শক্তিশালী এক চক্র। আবার সেই চক্রের টাকার ভাগ নিয়ে প্রায়সময় মারামারি, এমনকি খুনের ঘটনাও ঘটেছে। আর ছিনতাই তো এখানে প্রতিদিনের ঘটনা।

সরেজমিন দেখা যায়, মৌলভিবাজার এলাকার রেললাইন সংলগ্ন ৮ ও ৯ নম্বর বস্তির রেললাইনের পাশে ছাউনি দেওয়া ছোট এক ঘর। সেই ঘরে দলে বেঁধে চলছে জুয়া খেলা। কিশোর থেকে মধ্যবয়সী, এমনকি বৃদ্ধও আছেন এই জুয়ার আসরে। অনেক রিকশাচালক ও অটোরিকশা চালককে দেখা গেল গাড়ি রেখে জুয়া খেলতে। আবার এখানকারই কয়েকটি স্থানে চলছে প্রকাশ্যে গাঁজা বিক্রি ও সেবন। অভিযোগ রয়েছে, শক্তিশালী এক চক্র নিয়ন্ত্রণ করছে এই মাদক ও জুয়ার বাণিজ্য।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মৌলভিবাজার ৮ ও ৯ নং বস্তির মাদক বাণিজ্য, ছিনতাই ও জুয়া খেলা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ৫ সদস্যের একটি শক্তিশালী চক্র। তাঁরা হলেন- মো. হানিফ প্রকাশ টোকাই হানিফ, শরীফ, সুমন, সোহেল ও রাজা। এদের মধ্য হানিফ প্রকাশ টোকাই হানিফ ৯ নম্বর পোল বস্তি এলাকার বাসিন্দা। তিনি একটি হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামি।

সূত্র জানায়, হানিফসহ তার পুরো পরিবার মাদক বাণিজ্যর সঙ্গে জড়িত। হানিফের আপন ছোট ভাই ইয়াসিন আরাফাত হিজড়া বেশে দাপিয়ে বেড়ায় এলাকায়। এছাড়া শরিফ, রাজা, সুমন ও সোহেলের নামে রয়েছে একাধিক ছিনতাইয়ের মামলা।

পরিচয় গোপন করে জুয়ার বোর্ডের মালিক আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, এখানে প্রকাশ্যে জুয়া খেলা ও মাদক সেবন করা যায়। প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের মাসিক লেনদেন আছে। আপনিও নিশ্চিন্তে খেলতে পারবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৫ নম্বর মোহরা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজী নুরুল আমিন মামুন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, এসব বিষয়ে আমি নিজেও চিন্তায় আছি। মাদক-জুয়ার আসরগুলো প্রশাসন দেখবে। আমি অনেকবার তাদের বলেছি, তারা না শুনলে তো আমার কিছুই করার নেই।

মোহরা এলাকার বাসিন্দা ইমরান হোসেন জনি বলেন, কী হবে আমাদের মোহরার। প্রকাশ্যে জুয়া খেলার পাশাপাশি সন্ধ্যার পর মোবাইল ছিনতাই ও মাদকের রমরমা ব্যবসা তো আছেই। মৌলভিবাজার ৯ নম্বর পোল বস্তিতে একটি ভয়ঙ্কর মাদক ও ছিনতাইকারী চক্র পুলিশের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে মাদক ও জুয়ার আসর নিয়ন্ত্রণ করছে। এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খুন পর্যন্ত হয়েছে। স্থানীয় মানুষরা বাধা দিতে গেলে দফায় দফায় হামলা করেছে রেললাইন ৮ ও ৯ নম্বর বস্তির মাদক কারবারি ও ছিনতাইকারীরা।

এসব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চাঁন্দগাও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মইনুর রহমান আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, মৌলভীবাজার রেললাইন এলাকায় প্রায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। আমার থানা এলাকায় মাদক ও জুয়া নিয়ে জিরো টলারেন্সে। এখন থেকে ধারাাবাহিক অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!