চকরিয়ায় খুন—আদর চেয়ারম্যানের সামনেই কোপানো হয় আমিরকে, পালাতে চাইলে গুলি

চকরিয়ার আলোচিত মো. আমির হত্যায় এজাহার দায়েরের পরও এখন মামলা রেকর্ড করেনি থানা পুলিশ। এছাড়া ঘটনার দুদিন পার হলেও গ্রেপ্তার নেই অভিযুক্তদের কেউ। তবে এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত এবং এর পেছনে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বার জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্ত্রী ছকিনা ইয়াসমিন।

সোমবার (২৩ মে) রাত ৮টার দিকে ডুমখালী খেলার মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে বুধবার (২৫ মে) দুপুরে নিহতের স্ত্রী ছকিনা ইয়াসমিন বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় এজাহার দায়ের করেন। কিন্তু এজাহারটি এখনও মামলা হিসেবে রুজু করেনি চকরিয়া থানা পুলিশ। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে তৎপরতাও নেই।

আরও পড়ুন: গৃহকর্মী কুপিয়ে খুন করল হাটহাজারীর গৃহকর্ত্রীকে

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের ভাগিনা নুরুল ইসলাম বলেন, সোমবার (২৩ মে) রাত ৮টার দিকে আমি ও মামা মালুমঘাট স্টেশনে বাজার করছিলাম। এসময় আবদুর রহমান ও সালাহউদ্দিন মোবাইলে বিচারের কথা বলে মামাকে ডুমখালী খেলার মাঠে যেতে বলেন। পরে আমি ও মামা মোটরসাইকেলে ডুমখালী খেলার মাঠে যাই। সেখানে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার আব্দুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা যাওয়া মাত্রই চেয়ারম্যানের সামনেই আবদুর রহমান ও সালাহউদ্দিন মামাকে জাপটে ধরে হাত বেঁধে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে তারা মামাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। এসময় ইউপি মেম্বার বলে উঠেন ‘শালাকে’ একেবারে মেরে ফেল। এরপর মামা পালানোর চেষ্টা করলে পেছন থেকে গুলি করা হয়। এসব দেখে আমি ভয়ে পালিয়ে চলে আসি।

নিহতের বড় ভাই আহমদ হোসেন বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাসানুল ইসলাম আদরের পক্ষে কাজ না করায় চেয়ারম্যান আদর পরিকল্পিতভাবে আমার ভাই আমির হোসেনকে খুন করেছেন।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে শিশু খুন—ভবন মালিককে ফাঁসাতে গিয়ে ফাঁসিতে ঝুলতে হবে ৩ খুনিকে

নিহতের স্ত্রী ছকিনা ইয়াসমিন বলেন, আবদুর রহমান একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তিনি ডুলাহাজারা ইউনিয়ন যুবদলের নেতা। আবদুর রহমান ও সালাহউদ্দিনকে তার গাড়ি করে এলাকায় ঘুরে বেড়ান চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর। তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খোলার সাহস করে না। আমরা স্বামীকে তারাই ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে। আমি আমার স্বামী খুনের দৃষ্টান্তমুলক বিচার দাবি করছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদরের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

যোগাযোগ করা হলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আজ (বুধবার) দুপুরের দিকে নিহত আমির হোসেন স্ত্রী ছকিনা ইয়াসমিন একটি এজাহার দিয়েছেন। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ঘটনার সঙ্গে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদরের সম্পৃক্ততার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ওসি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

মুকুল/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!