কৃষি কর্তার ‘কাণ্ড’—সরকারি চাকরির আড়ালে বেসরকারি ফার্মের কর্তাও তিনি, নেন মোটা অঙ্কের মাইনে

তিনি সরকারি কর্মকর্তা। তবে চাকরির পুরোটা সময় থাকেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে। কারণ সরকারি চাকরির আড়ালে তিনি যে ওই প্রতিষ্ঠানেরও কর্মকর্তা!

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর ১৭ নম্বর ধারায় উল্লেখ রয়েছে, যে কোনো সরকারি কর্মকর্তা সরকারের অনুমোদন কিংবা সরকারি কাজ ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকুরি বা কাজ করতে পারবেন না। যা সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালার সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন।

তবে এ নিয়মের কেয়ার করেন না চন্দনাইশ উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকতা রুপায়ন চৌধুরী প্রকাশ বুড্ডু। সরকারি চাকরির আচরণবিধিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে তিনি নিয়মিত অফিস করছেন পটিয়ার এটিআর এগ্রোফার্মে।

জানা যায়, রুপায়ন চৌধুরী প্রকাশ বুড্ডু দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে চন্দনাইশ কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। এখানে কর্মরত থাকলেও তিনি অফিস করেন না। সরকারি চাকরির আড়ালে তিনি মোটা অঙ্কের বেতনে চাকরি করছেন পটিয়ার এটিআর এগ্রোফার্মে।

সরেজমিনে দেখা যায়, গত সোমবার (১৭ অক্টোবর) পটিয়ার এটিআর এগ্রোফার্মের অফিসে বসে কাজ করছেন রুপায়ন চৌধুরী বুড্ডু। অথচ এ সময়টাতে তাঁর চন্দনাইশের কৃষি অফিসে থাকার কথা। সেই সময়েই তিনি চাকরি করছেন এ প্রতিষ্ঠানে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এটিআর এগ্রোর্ফামের এক কর্মকর্তা আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, সরকারি চাকরি ফাঁকি দিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন চাকরি করছেন রুপায়ন চৌধুরী। একদিকে সরকারি চাকরি, অন্যদিকে তাঁর ভাইয়ের রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন তিনি। তাঁর নানা অনিয়ম নিয়ে কথা বলায় অনেককে চাকুরিচ্যুতও করেছেন তিনি।

এটিআর এগ্রোর্ফামের সিকিউরিটি ইনর্চাজ মো. রফিক আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, রুপায়ন চৌধুরী কীসের সরকারি চাকরি করেন বুঝি না, সারাদিনই কাটান আমাদের ফার্মে।

জানতে চাওয়া হলে রুপায়ন চৌধুরীে বুড্ডু আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমি যা কিছুই করি না কেন আমার উপরস্থ কর্মকর্তারা তা অবগত আছেন। আপনি তাদের সাথে কথা বলুন। উনারাই আমার বিষয়ে বলবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমার যা ইচ্ছে আমি তাই করব। তাতে আপনার কী?

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চন্দনাইশ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা রাণী সরকার আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, অফিস ফাঁকি দিয়ে রুপায়ন চৌধুরীর চাকরির কথা শুনেছি। কিন্তু সঠিক প্রমাণের অভাবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছি না। আপনার কাছে কোনো প্রমাণ থাকলে তা আমাকে দিন। আমি তাঁর বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!