কক্সবাজার হবে বিশ্বের সবচে আধুনিক পর্যটন নগরী

অনন্য উচ্চতায় স্থান পেয়েছে কক্সবাজার বিমানবন্দর। সমুদ্র ছুঁয়ে উঠানামা করবে উড়োজাহাজ। রোববার (২৯ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে দিয়ে অনন্য উচ্চতায় স্থান লাভ করল বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত শহরের বিমানবন্দরটি।

এই রানওয়ের কাজ শেষ হলে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে হবে দেশের দীর্ঘতম রানওয়ে সমৃদ্ধ বিমানবন্দর। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আরও পড়ুন: কাল কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণকাজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বেঁচে থাকলে ৪০ বছর আগেই এই দেশ উন্নতির শিখরে পৌঁছে যেত। আমরা এখন দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করছি। কক্সবাজারের প্রতি বঙ্গবন্ধুর আলাদা আকর্ষণ ছিল। প্রতি শীত মৌসুমে আমাদের নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে যেতেন। উখিয়াতে জঙ্গলের পথ বেয়ে বেড়াতে যেতাম। বাঘ, হাতির ডাক শোনতাম। যদিও এখন সেই চিহ্ন নেই। কক্সবাজারে যে ঝাউবাগানটা দেখেন তা বঙ্গবন্ধুর হাতে তৈরি। কক্সবাজারকে আকর্ষণীয় পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ার স্বপ্ন ছিল বঙ্গবন্ধুর।

তিনি বলেন, এক সময় কক্সবাজারের নামলেই শুটকির গন্ধ পাওয়া যেত। সেই গন্ধ এখন পাওয়া যায় না। খুরুশকুলে আধুনিক একটা শুটকির হাট করে দেব, যাতে সেখানকার বাসিন্দারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়।

আরও পড়ুন: ঘুরে দাঁড়াবে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প—প্রত্যাশা প্রতিমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সোনাদিয়াতে পরিবেশবান্ধব ট্যুরিজম স্পট করে দেব। টেকনাফে ইকোনোমিক জোন করা হবে। পুরো কক্সবাজারকে উন্নত করতে আমাদের প্ল্যান রয়েছে। কক্সবাজার হবে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ আধুনিক পর্যটন নগরী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্যে যেতে প্লেনের রিফুয়েলিং এর স্থান হবে কক্সবাজার বিমানবন্দর। রাজধানীবাসীর সুবিধার্থে মেট্রোরেলের বিস্তৃতি হবে কমলাপুর পর্যন্ত।

৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরবর্তী ২১ বছরে অবৈধ ক্ষমতা দখলদারদের কারণে দেশের উন্নয়ন হয়নি। ভৌগলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়ন করা হচ্ছে -বলেন প্রধানমন্ত্রী।

কক্সবাজার বিমানবন্দর প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন- বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো: মাহবুব আলী এমপি, সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. কামরুল হাসান, বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান, কক্সবাজারের সংসদ সদস্যবৃন্দ, জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতারা।

আরও পড়ুন: ‘লঙ্কাকাণ্ড’—সমুদ্রসৈকতে ঘোড়ার মৃত্যু নিয়ে মালিক-কর্তৃপক্ষের লুকোচুরি

উল্লেখ্য, কক্সবাজার বিমানবন্দর প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে ১০ হাজার ৭০০ ফুট রানওয়ে হবে। যা রাজধানীর হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের (১০ হাজার ৫০০ ফুট) চেয়েও বেশি। এর ফলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের বোয়িং ৭৭৭ ও ৭৪-এর মতো বড় আকারের বিমানগুলো এই বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারবে এবং এর ফলে এখানে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করার পথ সুগম হবে।

এ প্রকল্পের মধ্য দিয়ে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক এই বিমানবন্দর যাত্রা শুরু করবে। বহির্বিশ্বের পর্যটকদের কাছে কক্সবাজারকে নতুনভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে এই বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার কাজে হাত দিয়েছে সরকার। দেশে প্রথমবারের মতো কক্সবাজারের সমুদ্রবক্ষে নির্মিতব্য রানওয়ের খরচ ধরা হয়েছে এক হাজার ৫শ’ ৬৯ কোটি টাকা।

বলরাম/এসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!