করোনাভাইরাসের নতুন ধরন আসতেই ধস নেমেছে তেলবাজারে। ব্যারেলপ্রতি দাম কমল ১০ ডলার।
অথচ এতদিন তেলবাজার নিয়ে বিশ্বনেতাদের যে তোড়জোড় ছিল তা এক নিমিষেই শান্ত করে দিল ‘ওমিক্রন’।
নতুন ধরন ওমিক্রনের পাওয়ার পর থেকে বিশ্ব অর্থনীতিতেও ধস নেমেছে। বড় বড় শেয়ারবাজারগুলোতে সূচকের পতন হয়েছে মোটা দাগে। সঙ্গে তেলের বাজারও ছিল নিম্নমুখী।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের খবরে জানা যায়, একদিনের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ১০ শতাংশের বেশি কমেছে। মার্কিন তেলের বেঞ্চমার্ক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দর ১৩ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল ৬৮ দশমিক ১৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে। আর আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১২ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল ৭২ দশমিক ৭২ ডলারে বিক্রি হয়েছে।
আরও পড়ুন : করোনার নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’—দ্রুত বিস্তারের শঙ্কা
করোনাকালীন ২০২০ সালের এপ্রিলের পর আবারো ধস নামল তেলের বাজারে।
এদিকে মাত্র কয়েকদিন আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আহ্বানে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ সমন্বিতভাবে স্ট্র্যাটেজিক পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ (এসপিআর) বা কৌশলগত মজুত থেকে বিপুল পরিমাণ তেল বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দেয়। তবে এ ঘোষণায় বিশ্ববাজারে সামান্য প্রভাব পড়ে। কিন্তু ওমিক্রন এসেই জ্বালানি তেলের দাম কমিয়ে দিয়েছে।
রয়টার্সের খবর অনুসারে বিশ্ব শেয়ারবাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। সংবাদ সংস্থাটি জানায়, শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডো জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজের সূচক কমেছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ। যা ২০২০ সালের অক্টোবরের পর সবচেয়ে বাজজে। এছাড়া ইউরোপীয় শেয়ারবাজারগুলোর সময়ও কেটেছে বিগত ১৭ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ। ইউরোপীয় বেঞ্চমার্ক স্টক্স ৬০০’র লেনদেন শেষে হয়েছে সূচকে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ পতনের মাধ্যমে। ২০২০ সালের জুনের পর থেকে যা সর্বনিম্ন।
তবে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছে এয়ারলাইন ও ভ্রমণসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। শুক্রবার ক্রুজ পরিচালনাকারী কার্নিভাল করপোরেশন, রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ক্রুজেস ও নরওয়েজিয়ান ক্রুজ লাইনের শেয়ারের ১০ শতাংশের বেশি দাম কমেছে। একই অবস্থা ছিল ইউনাইডেড এয়ারলাইনস, ডেল্টা এয়ারলাইন ও আমেরিকান এয়ারলাইনসেরও।
শুক্রবার করোনাভাইরাসের নতুন এই ধরনকে উদ্বেগের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এক জরুরি বৈঠকের পর করোনার বি.১.১৫২৯ ধরনের এই ভাইরাসের নাম দেওয়া হয় ‘ওমিক্রন’।