হালিশহরে ৩১ স্পটে চার্জ নামে চাঁদাবাজি, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারি রিকশা

চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর যেন নিষিদ্ধ ব্যাটারি রিকশার স্বর্গরাজ্য। দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে টোকেনের মাধ্যমে আদায় করা হতো চাঁদা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্টে গেছে চাঁদাবাজির ধরন। এখন নতুন কৌশলে চার্জ বিলের নামে নেওয়া হচ্ছে চাঁদা।

স্থানীয়রা বলছেন, মাঝে মাঝে নড়েচড়ে ওঠে প্রশাসন। তারপর চলে বেশ কিছুদিন অভিযান। এরপর আবার শুরু হয় প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি। কিন্তু পরিবহনের ওপর অভিযান হলেও মূল চাঁদাবাজরা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। এর মাঝে গরিবের পেটে পড়ে লাথি।

জানা যায়, হালিশহর এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৩১টি চার্জ স্টেশন আছে। কিন্তু সব স্টেশনেই পোস্টপেইড মিটার।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় থানা ও ট্রাফিক বিভাগকে মাসোহারায় ম্যানেজ করে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে একটি চক্র। আর সেই চাঁদা আদায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে অনিবন্ধিত সংগঠনের কথিত সাধারণ সম্পাদক সানাউল্লাহ চৌধুরী।

চাঁদাবাজি নিয়ে অনুসন্ধানে আলোকিত চট্টগ্রামের হাতে এসেছে ব্যাটারি রিকশার গ্যারেজে ঝুলানো ছবি ও একাধিক তথ্য। অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, টোকেন বাণিজ্য বন্ধ হয়েছে ঠিকই। কিন্তু সেই টোকেনের চাঁদা আদায় হচ্ছে ভিন্ন কৌশলে।

আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে চট্টগ্রামে বাসে নারীকে ধর্ষণ করল চালক—হেলপার—সুপারভাইজার

চাঁদা উত্তোলনের বিষয়ে চট্টগ্রাম ইলেকট্রিক চার্জার রিকশা মালিক সমিতির কথিত সাধারণ সম্পাদক ছানাউল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, প্রতিটা গ্যারেজ উত্তোলন করছে, বিভিন্ন খরচের জন্য এই টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। এই বলেই তিনি মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

ব্যাটারি রিকশা চালকের বয়সসীমার ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়ছে কি-না জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার তারেক আহম্মদ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ‘এই পরিবহনতো বৈধ নয়। তাই আমাদের নির্দেশনা দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আপনি সংশ্লিষ্ট থানার সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করুন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাটারি রিকশা চালক আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ‘আগে চার্জ বিল ও গ্যারেজ বিল মিলিয়ে প্রতিদিন আদায় করা হতো ১২০ টাকা এবং টোকেন বাবদ আদায় হতো ৮০ টাকা। কিন্তু সম্প্রতি এই টোকেন বিল আদায়ের কৌশল পরিবর্তন হয়েছে। এখন চার্জ বিলের নামেই নেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা চাঁদা। তার মধ্যে ১২০ টাকা গ্যারেজ বিল ও ৮০ টাকা টোকেন বিল।’

পোস্টপেইড মিটারে রিকশার চার্জ স্টেশনের বৈধতার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় চট্টগ্রাম মেট্রো বিদ্যুৎ বিভাগের আগ্রাবাদ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিমের কাছে। তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, পোস্টপেইড মিটারে ব্যাটারিচালিত রিকশার চার্জ স্টেশন তৈরি করা পুরোপুরি অবৈধ। এই বিষয়টি আমি আপনার থেকে জানলাম। আমি দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।

ডিজে/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!