পুলিশের ওপর হামলা—রিমান্ডে সেই লিয়াকত চেয়ারম্যান

বাঁশখালী গণ্ডামারা ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীর একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এছাড়া ১৬ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিয়সিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঈনুল ইসলামের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন লিয়াকত আলী।

এদিন সকাল সাড়ে ১১টায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ বাঁশখালীতে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আসামিপক্ষের আইনজীবী নুরুল আবছার আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীর একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এছাড়া চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলায় পুলিশ লিয়াকত আলীর ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত আগামী ২০ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন।

আরও পড়ুন: ‘রক্তাক্ত গণ্ডামারা’—সেই লিয়াকত চেয়ারম্যানকে ধরল ডিবি পুলিশ

জানা গেছে, বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণ্ডামারার ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে চেয়ারম্যান লিয়াকত ও তার বাহিনীর সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের বালির ঠিকাদারের কাজে বাধা দেওয়া নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়।

লিয়াকতকে গ্রেপ্তারের আগে বাঁশখালী থানায় ঠিকাদার, থানা পুলিশ এবং ডিবি পুলিশ বাদি হয়ে তিনটি মামলা করে।

পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় বাঁশখালী থানার এসআই লিটন চাকমা বাদী হয়ে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা করেন।

এছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে জাহিদ হাসান বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেন। মামলার পর ৯ ফেব্রুয়ারি ভোরে নগরের সুগন্ধা আবাসিক এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে ডিবির উপপরিদর্শক হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে অপর মামলাটি করেন।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, লিয়াকতের বিরুদ্ধে আগের ২৪টি মামলা রয়েছে। নতুন করে আরও তিনটি মামলা যোগ হয়ে বর্তমানে মামলার সংখ্যা ২৭টি। তবে আগের ২৪ মামলার মধ্যে কয়েকটিতে তিনি জামিনে আছেন। এছাড়া কয়েকটি মামলায় ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বর্তমানে তাঁর ১০-১২টি মামলা তদন্তাধীন ও বিচারাধীন আছে।

এসব মামলার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ১৯৯৪ সালে গণ্ডামারার আবু তাহের ও ১৯৯৯ সালে গণ্ডামারার নুরুল কবিরকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা, ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল গণ্ডামারার মর্তুজা আলী, মো. আংকুর, জাকের আহম্মদ, জাকের হোসেনসহ চারজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা, ২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ আলীকেও প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা মামলা।

প্রসঙ্গত, কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে ২০১৫ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী ও তার বাহিনীর নেতৃত্বে ১৮ বার হামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে সন্ত্রাসীদের হামলায় মোট ১৩ জন নিহত এবং তিন শতাধিক লোক আহত হয়েছেন।

এএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!