আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সাময়িক দৃশ্যমান সংকটে বিএনপির অসাংবিধানিক কর্মপন্থা প্রতিহত করতে নৈতিক শক্তি ও সাহসকে ধারণ করে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। এজন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করার লক্ষ্য নিয়ে দেশপ্রেমিক জনতাকে মাঠে নামতে হবে।
রোববার (১৪ আগস্ট) বিকেলে নগরের কাজীর দেউড়ির ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: আগস্ট মাস আসলে বিএনপি নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে : তথ্যমন্ত্রী
সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন, পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও মোনাজাত করা হয়।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, বৈশ্বিক বাস্তবতার আলোকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে যে দৃশ্যমান সংকট চলছে তা সাময়িক হলেও বিএনপি পরিকল্পিতভাবে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে বৈধ, সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্ম না হলে বাঙালি চিরদিন দাস হয়ে থাকত। অথচ ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের নীল নকশা অনুযায়ী ’৭১ এর পরাজিত শক্তির প্রত্যক্ষ ইন্ধনে কিছু বিপথগামী সেনা সদস্য বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে বিশ্ববাসীর কাছে বাঙালিকে কলঙ্কিত করেছে। সেদিনের মর্মান্তিক ঘটনার পর অনেক বিশ্বনেতা মন্তব্য করেছিলেন, জাতিকে যিনি স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন তাকে নির্মমভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে এই জাতিতে অনেক বেঈমান আছে। আমাদের জন্য এর চেয়ে বড় কোনো লজ্জা আর হতে পারে না। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পেছনে, সেদিন জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ ইন্ধন ছিল কিনা? অবশ্যই ছিল। কারণ তিনি অধীনস্থ সামরিক কর্মকর্তা হয়েও ষড়যন্ত্রকারীরা তাকে বঙ্গবন্ধুকে উৎখাত করার কথা জানালেও তিনি তাদের কোর্ট মার্শাল ল করাননি। বরং বলেছেন- তোমরা যদি সাকসেসফুল হতে পার তাহলে আছি। এ কথার অর্থ কি দাঁড়ায়? জিয়াউর রহমান প্রস্তুত ছিলেন তিনি একটা কিছু ঘটিয়ে ফেলবেন এবং সুযোগ পেয়ে তিনি এই দেশকে আবার পাকিস্তান বানাবেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়া ঠিক তাই করেছেন এবং তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া একই কাজটি আরও ভালোভাবে করতে চেয়েও ব্যর্থ হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে যেখান থেকে টেনে তুলে আজ উচ্চতার আসনে বসিয়েছেন তা অনেকের সহ্য হচ্ছে না। এরা জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা ধরনের মিথ্যাচার করছে। আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শের উত্তরসূরী এবং চট্টগ্রামের মাটিতে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার স্বপ্নজাল বুনেছেন এমএ আজিজ ও জহুর আহমদ চৌধুরীকে ঘিরে। এই চট্টগ্রাম থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার বার্তাটি বিশ্ববাসীর কাছে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। চট্টগ্রামের মাটিতেই বঙ্গবন্ধু অনেক স্বপ্ন বুনন করেছিলেন। সেসকল স্বপ্ন বাস্তবায়নে চট্টগ্রামবাসীকেই সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপি-জামায়াত নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে—আ জ ম নাছির
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহসভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, এম. জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জালাল উদ্দীন ইকবাল, দিদারুল আলম চৌধুরী, জোবাইরা নার্গিস খান, ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দীন আহমদ, ইঞ্জিনিয়ার বিজয় কৃষাণ চৌধুরী, আব্দুল লতিফ টিপু, রোটারিয়ান মো. ইলিয়াছ, মো. জাবেদ, হাজী বেলাল আহমদ ও মোর্শেদ আক্তার চৌধুরী।
আরএস/আরবি