বড়পোলে রাস্তা দখল করে কাদেরের জমিদারি, ট্রাক স্ট্যান্ডের আড়ালে মাদকের আসর

বন্দর থানার বড়পোল মোড়ের ব্রিজ থেকে আনন্দবাজার সড়কের প্রায় ১ কিলোমিটার সরকারি জায়গায় গড়ে উঠেছে অবৈধ বাজার ও ট্রাক স্ট্যান্ড। ফলে যানজট নিত্যসঙ্গী ওই এলাকায়। আবার সেই বাজার-ট্রাক স্ট্যান্ডকে ঘিরে চলছে জুয়া ও মাদকের রমরমা বাণিজ্য। এছাড়া আছে নিয়মিত চাঁদা আদায়ের অভিযোগও।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে এ চিত্র।

স্থানীয়দের অভিযোগ থানা পুলিশের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে চলছে এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড। বাজার ও ট্রাক স্ট্যান্ডকে ঘিরে চাঁদা আদায় নিয়ে এলাকায় একাধিকবার মারামারি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। অবৈধ বাজার ও ট্রাক স্ট্র্যান্ডকে ঘিরে চলছে জুয়া ও মাদক বাণিজ্য।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এই বাজার নিয়ন্ত্রণে করছেন কাদের নামে নতুন পাড়ার এক স্থানীয় যুবক। তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে প্রায় ৫০টি দোকান ও ট্রাক স্ট্যান্ড। প্রতিটি দোকান থেকে প্রতিদিন ২০০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করা হয়। ট্রাক প্রতি আদায় করা হয় ২০০ টাকা।

হিসাব করে দেখা যায়, ৫০ টি দোকান থেকে দৈনিক চাঁদার পরিমাণ দাঁড়ায় ১০ হাজার টাকা। মাসে প্রায় ৩ লাখ টাকা। অন্যদিকে ট্রাক স্ট্র্যান্ডে রয়েছে প্রায় ৭০টি গাড়ি রাখার জায়গা। এতে দৈনিক প্রায় ৪০টি গাড়ি থেকে দিনে চাঁদার পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার টাকা। মাসে প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। প্রতি মাসে এই সড়ককে কেন্দ্র করে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকার চাঁদাবাজি চলে। আর এসব চাঁদার ভাগ পায় স্থানীয় প্রশাসন, লোকাল মাস্তান ও কাউন্সিলরের বাহিনী।

আরও পড়ুন: উল্টোপথে কদমতলী রেল ক্রসিং পার হতে গিয়ে ধরা খেল ৪১ গাড়ি

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক দোকানদার বলেন, কাদের প্রতিদিন দোকান থেকে ২০০ টাকা করে নিয়ে যায়। কোনোদিন টাকা দিতে না পারলে মারধর ও দোকান ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেয়।

তিনি আরও বলেন-চাঁদার টাকার ভাগ পায় পুলিশ, স্থানীয় মাস্তান, রাজনৈতিক নেতা এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বাহিনী।

এসব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহেদুল কবির আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমার থানা এলাকায় কেউ অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের বলেন, আপনি আমার অফিসে আসেন। চা খেতে খেতে কথা বলব। এরপর তিনি নিউজ না করার অনুরোধ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মান্নান আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, এই ট্রাক স্ট্র্যান্ড ও দোকান ঘরগুলো ঘিরে মাদক বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি চলার বিষয়টি জানি। বেশ কয়েকবার কাদেরকে ডেকে সাবধানও করেছি। কিন্তু তাকে কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বন্দর থানা কী করছে সেটাই প্রশ্ন?

যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে দোকান স্থাপন করলে আমরা বরাবরই উচ্ছেদ করে থাকি। এ বিষয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসআর/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!