গরিবকে পিটিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর থেকে বের করে দিলেন চেয়ারম্যান

বাঁশখালীতে অসহায় এক ব্যক্তিকে বেত দিয়ে পিটিয়ে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী।

শনিবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে পূর্ব চাম্বল আশ্রয়কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীরা হলেন- চাম্বল আশ্রয়কেন্দ্রে ১০১ নম্বর ঘরের মালিক আব্দু শুক্কুর ও তাঁর স্ত্রী মোছা. সুরভী বেগম।

জানা গেছে, ২০২২ সালের ২ অক্টোবর চাম্বল আর্দশ গ্রামে ১২০ পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর দেওয়া হয়। প্রতি ১০ পরিবারকে ১টি করে নলকূপ দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে সেভাবে নলকূপ স্থাপন করা হয়নি। ৭১টি পরিবারের ভরসা মাত্র একটি নলকূপ। ফলে দীর্ঘদিন ধরে পানির বৈদ্যুতিক মিটারের বিলকে কেন্দ্র করে ৬৯ নম্বর ঘরের মালিক মো. ইলিয়াছ ও ১০১ নম্বর ঘরের মালিক শুক্কুরের বিরোধ চলছিল।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহারের নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে

এদিকে বিরোধের জেরে গত ২৭ জানুয়ারি সকালে দুপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। ওই সময় ইলিয়াছের হামলায় আব্দু শুক্কুর ও স্ত্রী সুরভী বেগম আহত হন। এ ঘটনা চেয়ারম্যান মুজিবুল হককে জানালে তিনি কোনো সহযোগিতা করেননি।

পরে আব্দু শুক্কুর ৯৯৯-এ ফোন করলে বাঁশখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তবে এর আগেই হামলাকারী ইলিয়াছ পালিয়ে যান। এরপর ২৮ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেন আব্দু শুক্কুর।

এদিকে অভিযোগের খবর পেয়ে চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী শনিবার রাত ১০টার দিকে মেম্বার, চৌকিদার আরও কয়েকজনকে নিয়ে আদর্শ গ্রামে আসেন। এরপর শুক্কুরকে বেত দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। এসময় চেয়ারম্যান বলেন- ৯৯৯-এ কেন ফোন করেছিস? কেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অভিযোগ করেছিস? কাল (রোববার) সকালের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে চলে যাবি। নইলে আরও পিটাবো, মেরে ফেলবো। এরপর হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখান।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আব্দু শুক্কুর বলেন, আমি দিনমজুর মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে খুশিতে বসবাস করছিলাম। চেয়ারম্যানের ভয়ে এখন পরিবার নিয়ে রাস্তায় ঘুরছি। কোথাও বিচার পাচ্ছি না। আমাদের পক্ষে বলার কেউ নেই।

স্ত্রী সুরভী বেগম বলেন, আমাদেরকে চেয়ারম্যান মেরে ফেলবে বলেছে। আমরা কোথায় গিয়ে থাকব? ইউএনও স্যার ঘরে ফিরে যেতে বলেছেন। আমরা ঘরে গেলে বাঁচব কিনা জানি না।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমি শুক্কুরকে পিটাইনি। তারা দুপক্ষ মারামারি করেছে। তাকে আমি পিটিয়েছি বলে কেউ শিখিয়ে দিয়েছে। আমার শত্রুরা এসব ষড়যন্ত্র করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যোগাযোগ করা হলে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, পানির আয়রনজনিত কারণে দুপক্ষের মারামারি হয়েছে। শুক্করের পিঠে দাগ দেখেছি। বিষয়টি আমি সশরীরে গিয়ে তদন্ত করব। তাদের ঘরে ফিরে যেতে বলেছি।

ইউবি/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!