নতুন গল্পের শুরু করতে পারছেন না জেনি—ফাউজুল

প্রেম করে বিয়ে করেছেন জেনি। প্রেমের এ বিয়ে মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয় পরিবার। কিন্তু জেনিকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর উড়ে গেছে প্রতিশ্রুতি। জোর করে জেনির কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে তালাকনামায় স্বাক্ষর। সেটিকে পুঁজি করেই চলছে এখন ষড়যন্ত্রের জাল বোনা।

রাউজান উপজেলার গশ্চি এলাকার জামাল উদ্দিনের মেয়ে তসলিমা জামান জেনি। ভালোবেসে বিয়ে করেন পটিয়া উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের পশ্চিম হুলাইন গ্রামের এটিএম জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে এটিএম ফাউজুল কবিরকে।

জেনি ও ফাউজুল দুজনই আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সেই সূত্রেই দুজনের পরিচয়। একসময় তা রূপ নেয় প্রেমে। কিন্তু এ প্রেমে বাধা হয়ে দাড়ায় জেনির পরিবার। কিছুতেই তারা ফাউজুলের সঙ্গে জেনির বিয়ে দেবে না। অপরদিকে ফাউজুলকে ছাড়া আর কাউকে বর হিসেবে মানতে নারাজ জেনি।

গত ২৭ মার্চ মেয়ে চট্টগ্রামের বাসা থেকে বের হন জেনি। সোজা চলে আসেন প্রেমিক ফাউজুলের কাছে। ওইদিনই তারা ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেন। এরপর পটিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান নেন জেনি।

আরও পড়ুন  : এ যেন সিনেমার গল্প—প্রেমিকাকে খুন করে প্রেমিকের আত্মহনন

এদিকে মেয়ে নিখোঁজ হয়েছে বলে নগরের পাঁচলাইশ থানায় জিডি করে জেনির পরিবার। সেই ডায়েরির সূত্র ধরে ২৮ মার্চ উভয় পরিবারেরে মধ্যে সমঝোতা বৈঠক হয়। ফাউজুলের হাতে তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জেনিকে ঘরে নিয়ে যায় পরিবার। প্রত্যাহার করে নেয় জিডিও।

বাসায় নেওয়ার পরই জেনির ওপর নেমে আসে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন। জোর করে তার কাছ থেকে নেওয়া হয় তালাকনামায় স্বাক্ষর।

এদিকে গত ৩১ মার্চ ফের পালিয়ে ফাউজুলের কাছে চলে আসেন জেনি। এরপর দুদফায় পটিয়া থানা পুলিশের ডাকে সাড়া দিয়ে উপস্থিত হয় জেনি ও ফাউজুলের পরিবার। গত ৪ এপ্রিল পটিয়ার বাড়ি থেকে ফাউজুল ও জেনিকে নিয়ে আসে পটিয়া থানা পুলিশ। সেখানে উভয় পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে থানার ওসি জসীম উদ্দীনের রুমে বৈঠক হয়।

ওসির রুমে সেই বৈঠকেই জেনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ভালোবেসেই তিনি বিয়ে করেছেন ফাউজুলকে। তার সঙ্গেই সংসার করবেন। তালাকনামায় স্বাক্ষর জোর করে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান জেনি।

এরপর গলার স্বর্ণের চেইন ও হাতের ব্রেসলেট খুলে ওসির উপস্থিতিতেই ভাইয়ের হাতে তুলে দেন জেনি।

জেনি-ফাউজুলের ভালোবাসার গল্পটা এখানেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু না, ভালোবাসার গল্পের ইতি টেনে সংসারজীবনের নতুন গল্পের সূচনা করতে পারছেন না তারা। এতে বারবার বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে জেনির পরিবার।

জেনি আলোকিত চট্টগ্রামের কাছে শঙ্কাপ্রকাশ করেন, তালাকনামায় জোর করে তার কাছ থেকে যে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে তা দিয়েই ষড়যন্ত্রের নতুন জাল বুনছে পরিবার। এ অবস্থায় তিনি সহায়তা চেয়েছেন প্রশাসনের।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!