তোরাব আলী ওরফে রেজাউল করিম। কখনো তিনি র্যাবের সিও, আবার কখনো তিনি ডিসি—এসপি—জেল সুপার। শক্তিশালী এক চক্র রয়েছে তাঁর। যে চক্রটি সক্রিয় কারাগার, আদালত ও থানার আশপাশে। আসামি ছাড়িয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে চক্রটি হাতিয়ে নেয় বড় অঙ্কের টাকা।
এদিকে নিজেকে অবিবাহিত পরিচয়ে এ পর্যন্ত ১১টি বিয়েও করেছেন তোরাব আলী! অথচ তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে অস্ত্র, মাদক ও প্রতারণার ১০টি মামলা।
জনপ্রতিনিধি হওয়ার প্রবল ইচ্ছা রয়েছে তোরাব আলীর। এজন্য ১৫-২০টি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিও হয়েছেন তিনি। তবে এর পেছনেও রয়েছে কাহিনী। একের পর এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হতে তিনি খরচ করেছেন কোটি টাকা!
সেই তোরাব আলী চক্রের ৫ সদস্যসহ ধরা পড়েছেন র্যাবের জালে। সোমবার (৪ মার্চ) রাতে চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ১০টি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়।
তোরাবের সঙ্গে আটক চক্রের অন্যরা হলেন— চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বাদশা (৩০), তারেকুর রহমান (২০), মো. জোবায়ের (২৩), এমদাদ উল্ল্যাহ মারুফ (২০) ও মিশকাত জান্নাত জুলি।
এদিকে তাদের আটকের পরদিন (৫ মার্চ) দুপরে সিপিএসসি (কক্সবাজার ক্যাম্প), র্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে করা হয়। সেখানে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন।
র্যাব জানায়, তোরাবের চক্রের ২০ জন সদস্য রয়েছে। ২ থেকে ৩ মাস ধরে তাদের অনুসরণ করছিল র্যাব। তারা কারাগার, আদালত ও বিভিন্ন থানায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকত। যাদের আত্মীয় স্বজনরা জেলে আছে তাদের নম্বর নিয়ে জেল থেকে ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিত এই প্রতারকচক্র। এমন কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতেই তাদের আটক করা হয়।
এদিকে তোরাব আলী কুতুবদিয়ায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করারও পরিকল্পনা করেছিলেন। এজন্য ১৫ থেকে ২০টি অনুষ্ঠানে হয়েছিলেন প্রধান অতিথি। এসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হওয়ার জন্য তিনি ১ কোটি টাকার মতো অনুদানও দিয়েছিলেন।
র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে ১১টি বিয়ে করেছেন তোরাব আলী ওরফে রেজাউল করিম। তোরাব আলীর বিরুদ্ধে প্রতারণা, মাদক, অস্ত্র মামলাসহ মোট ১০টি মামলা রয়েছে। আটকদের কাছ থেকে ১০টি মোবাইলও উদ্ধার করা হয়েছে।
আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম