‘জিয়ার লাশ বিতর্ক’—আবারও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মারলেন দুই মন্ত্রী

জিয়াউর রহমানের লাশ বিতর্কে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। এমন পরিস্থিতিতে আবারও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মারলেন আওয়ামী লীগ সরকারের দুই মন্ত্রী।

এক মন্ত্রী ঘোষণা দিলেন— জিয়ার লাশ কবরে থাকার প্রমাণ দিতে পারলে তিনি নাকে খত দিবেন।

আরেক মন্ত্রী জিয়ার লাশ নিয়ে ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা চলছে’ মন্তব্য করে প্রশ্ন ছুড়ে দেন— হত্যাকাণ্ডের পর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস থেকে জিয়ার লাশ রাঙ্গুনিয়া পাহাড়ে কে নিয়ে গিয়েছিল?

সোমবার (৩০ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হত্যা রোধে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনায় সভার আয়োজন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কেন্দ্রীয় সংসদের এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

আরও পড়ুন: করোনা টেস্টে খালেদা জিয়ার আসল জন্মদিনের তথ্য প্রকাশ!

আলোচনা সভায় মন্ত্রী মোজাম্মেল হক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, ইতিহাসের স্বার্থে জিয়ার কবরের সত্যতা উদ্ঘাটন করা উচিত। যদি তারা প্রমাণ করতে পারেন লাশ কবরে আছে তাহলে আমি নাকে খত দিবো। আমি চ্যালেঞ্জ করছি কবরে জিয়ার মৃতদেহ নেই।

মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী বলেন, আপনারা ছবি দেখান। ছবি যদি নাও থাকে বিজ্ঞানকে আমরা কেউ অস্বীকার করতে পারি না। ডিএনএ টেস্ট করলেই পাওয়া যাবে। যদি ওখানে কোনোকিছু থেকে থাকে, ডিএনএ টেস্ট করে তারা প্রমাণ করুক। যদি প্রমাণ হয়, জাতির কাছে নাকে খত দিয়ে ক্ষমা চাইবো। আমি যদি মিথ্যা কথা বলে থাকি, জাতি বিচার করুক, কোনো দণ্ড দিলেও মেনে নেবো।

মন্ত্রী বলেন, যিনি রাষ্ট্রপতি, রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচার অনুসারে তার সবকিছুর ছবি ধারণ করা থাকে। জিয়াউর রহমানের লাশের ছবিটা তাহলে দয়া করে দেখান। বিএনপি মহাসচিব বলেছেন— জিয়ার লাশের পোস্টমর্টেম হয়েছে, ২২টা বুলেট পাওয়া গেছে। যদি সত্য হয়ে থাকে ছবি দেখান, যদি বিক্ষিপ্ত হয়ে থাকে, মুখের ছবি দেখান।

মন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি মহাসচিব বলেছেন— আমি জিয়াউর রহমানের কবর অপসারণের কথা বলেছি। তবে কথাটি আসলে আংশিক সত্য। আমি জাতীয় সংসদে একাধিকবার বলেছি, সংসদের নকশার বাইরে যা কিছু আছে, তার সবকিছুই আমাদের অপসারণ করা উচিত। কেননা এটি বিশ্বের মধ্যে একটি অনন্য নিদর্শন। আমি নকশার বাইরে সবকিছুই অপসারণ করতে বলেছি। সেখানে অন্যদের কবরও আছে। শুধু জিয়াউর রহমানের কবরকে নির্দেশ করে বলা নয়।

আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া জানতেন, সরকারের সহায়তায় গ্রেনেড হামলা হয়েছিল

এদিকে একইদিন (৩০ আগস্ট) নিজের সরকারি বাসভবনে ব্রিফিং করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের লাশ নিয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা করছেন। হত্যাকাণ্ডের পর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস থেকে জিয়ার লাশ রাঙ্গুনিয়া পাহাড়ে কে নিয়ে গিয়েছিল— জানতে চান কাদের।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‌অন্যান্য প্রশ্নের মতো জিয়াউর রহমানের লাশ নিয়েও বিএনপি মহাসচিব কখনো কোনো প্রশ্নের জবাব দেন না। প্রশ্ন করলে মূল প্রসঙ্গ এড়িয়ে তিনি সামঞ্জস্যহীন জবাব দেন। জিয়াউর রহমানের লাশ নাকি জেনারেল এরশাদ কাঁধে বহন করেছেন— এমন উত্তর দিয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা করেন ফখরুল সাহেব।

সেতুমন্ত্রী বলেন, এরশাদ কফিন বহন করেছেন কিন্তু ভেতরে জিয়ার লাশ আছে, তা তো তিনি কখনো বলেননি। জিয়াউর রহমানকে হত্যার পর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ থেকে তার লাশ রাঙ্গুনিয়া পাহাড়ে নিয়ে গিয়েছিল কে?

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম, ক্যাম্পাসগুলোকে উত্তপ্ত করতে ষড়যন্ত্রের জাল বোনা হচ্ছে। করোনার ক্ষতি কাটিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে যখন ছাত্র-শিক্ষকরা প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন ঠুনকো অজুহাতে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার নোংরা রাজনীতি করছে বিএনপি। সাম্প্রদায়িক দানবদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপি অতিদানবীয় অপতৎপরতা চালাচ্ছে।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!