বেড়াতে গিয়ে—কক্সবাজারে মদ খেয়ে চট্টগ্রামের ‘ছাত্রলীগ নেতার’ মৃত্যু 

চট্টগ্রামের মিছিল-মিটিংয়ে সামনের সারিতেই দেখা যেত তাঁকে। তরুণদের সংগঠিত করার দারুণ দক্ষতাও ছিল তাঁর। মেধাবী সেই তরুণ হারিয়ে গেছে মদের জোয়ারে।

১৭ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সকালে অতিরিক্ত মদ পানে মারা যান চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ নেতা রাফসান ইরফান। মাত্র ২৭ বছর বয়সী এই তরুণ কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়েছিলেন ১৫ সেপ্টেম্বর।

এদিকে মেধাবী এই তরুণের হঠাতৎ মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না। না নেতা, না কর্মী কিংবা বন্ধুবান্ধব কেউই। সন্দেহের গন্ধও দেখছেন কেউ কেউ। তাঁরা বলছেন, এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। কম সময়েই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে উত্থানই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল রাফসানের।

আরও পড়ুন: রাতেই রক্ত ঝরল ছাত্রলীগের দ্বন্দ্বে, আতঙ্ক ছড়াচ্ছে নাহিদ—কায়সার গ্রুপ

১৫ সেপ্টেম্বর রাফসান ইরফান কক্সবাজারের বে ওয়ান্ডারস নামে একটি হোটেলে উঠেন আরেক বন্ধু নিয়ে। ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার পর তাঁদের অতিরিক্ত বুকের ব্যথা ও বমি হয়। ওইসময় লেবুর রস ও তেঁতুল খেলে কিছুটা স্বস্তি অনুভব করেন তাঁরা। এরপর ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু ভোরে আবারও বুকে ব্যথা বেশি অনুভব করলে তাদের দুইজনকে কক্সবাজারের বেসরকারি একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় সেখান থেকে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে। তবে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয় রাফসান ইরফানের।

কক্সবাজারের হোটেল বে ওয়ান্ডারসের ম্যানেজার এম মান্নান আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ১৫ সেপ্টেম্বর হোটেলের ৬০২ নম্বর রুমে উঠেন রাফসান ইরফান। বুকিংয়ে তাঁর নাম থাকলেও হোটেল রেজিস্ট্রারের দেখা যায়—যে রুমে তাঁরা ছিলেন, এরমধ্যে রাফসানের নাম নেই। এখানে যারা ছিল তাদের নাম লেখা হয় এমডি পিয়াম ও রায়হান। তাদের বয়সও ২৫-এর উপরে।

জানা যায়, রাফসান ইরফানের সঙ্গে বে ওয়ান্ডারস হোটেলের অ্যাকাউন্ট হেড কায়সার আহমেদের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। মূলত কায়সারের রেফারেন্সেই ১৫ সেপ্টেম্বর ওই হোটেলে ওঠেন রাফসান। ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় হঠাৎ বন্ধুসহ রাফসান অসুস্থ হয়ে পড়লে দেখভাল করেন কায়সার।

একই রুমে অসুস্থ হয়ে পড়া আরেক বন্ধু বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলেও আলোকিত চট্টগ্রামকে নিশ্চিত করেছেন বে ওয়ান্ডারস হোটেল কর্তৃপক্ষ। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, চিকিৎসাধীন যুবক অতিরিক্ত নেশায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছে।

তবে অন্য হোটেলে তাঁর রাজনৈতিক কিছু জুনিয়র ছেলে ছিল বলে রাফসানের বন্ধুরা জানান।

আরও পড়ুন: সন্ত্রাসীদের গুলিতে ‘এমইএস কলেজ’ ছাত্রলীগ নেতা নিহত

উল্লেখ, রাফসান ইরফান দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তার বাড়ি চটগ্রামের কোতোয়ালী থানার এনায়েনবাজার বাটালি রোডে। তিনি কোতোয়ালী থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ছিলেন। শুরুতেই তিনি ছাত্রলীগের রিমন গ্রুপের রাজনীতি করতেন। পরে তিনি রাজীব দত্ত রিংকু গ্রুপের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। কোনো পদ-পদবি না থাকলেও তাঁকে সবাই ছাত্রলীগ নেতা হিসেবেই চিনতেন।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!