‘বিব্রত নেতারা’—ইয়াবাকাণ্ডে জড়িয়ে পদ হারালেন সেই ছাত্রলীগ নেতা

ছাত্রলীগ নেতার ইয়াবাকাণ্ডে বিব্রত চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারাও। এমন কর্মকাণ্ড ভাবিয়ে তুলেছে দলীয় নীতিনির্ধারকদেরও। ইয়াবাসহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের ৫ দিনের মাথায় কমিটি থেকে বহিষ্কার হতে হলো পাহাড়তলী থানা ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তানভীরুল ইসলাম সাজুকে।

রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতির মাধ্যমে এ বহিষ্কারেদেশ জানানো হয়। জাকারিয়া দস্তগীর আলোকিত চট্টগ্রামকে নিশ্চিত করেছেন, দুই বছর আগেই সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য নগর ছাত্রলীগের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বাবুকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন: ছাত্রলীগ নেতার ‘ইয়াবা বাণিজ্য’—বাইকে চট্টগ্রামের ২ নেতা যাচ্ছিল ঢাকায়, পথেই ধরা

এ বিষয়ে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ‘আগামীতেও ছাত্রলীগের কেউ যদি সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে সে যেই হোক সাথে সাথে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে কার অনুসারী বা কার অনুসারী না সেটা দেখা হবে না। কয়েকজনের কারণে সংগঠনের বদনাম কোনোভাবে মেনে নেওয়া হবে না। ছাত্রলীগ সততার সাথে দলের জন্য একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আগামীতেও করে যাবে। কোনো অপরাধীর জায়গা ছাত্রলীগে হবে না।’

নগর ছাত্রলীগে একের পর এক নেতা-কর্মী জড়িয়ে পড়ছেন মাদক ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে। তাদের এমন কর্মকাণ্ডে বিব্রত নেতারা। জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে ‘আনঅফিসিয়াল’ আলোচনাও হয়েছে নগর আওয়ামী লীগে। ছাত্রলীগের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে নেতাদের খুব বেশি ‘উদার’ না হতেও পরার্মশ দিয়েছেন কেউ কেউ।

জানা যায়, চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি পাহাড়তলী থানা ছাত্রলীগের কমিটিতে মো. আশিকুর রহমান প্রিন্সকে সভাপতি ও ইয়াছিন আরাফাত আরমানকে সাধারণ সম্পাদক করে আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির মেয়াদ বছর না পেরোতেই ইয়াবাকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তানভীরুল ইসলাম সাজু। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

দুই বছর আগে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের কারণে কমিটি থেকে বহিষ্কৃত হন নগর ছাত্রলীগের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বাবু। তাঁর সহযোগী হিসেবে ইয়াবাকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন সাজু। তাঁরা প্রতি মাসে মোটরসাইকেলে করে ৩ থেকে ৪টি ইয়াবার চালান ঢাকায় নিয়ে যান। যার ফলে রাতারাতি পাল্টে যায় তাঁদের জীবনচিত্র। শুরু হয় তাঁদের বিলাসী জীবনযাপন।

আরও পড়ুন: সন্ত্রাসীদের গুলিতে ‘এমইএস কলেজ’ ছাত্রলীগ নেতা নিহত

কিন্তু তাঁদের এই বিলাসী জীবন টিকল না বেশিদিন। শেষমেষ ধরা পড়তে হলো র্যাবের হাতে। ৩১ আগস্ট ইয়াবার একটি চালান নিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাওয়ার পথেই ফেনীতে র্যাবের হাতে ধরা পড়েন তাঁরা। এসময় তাঁদের প্যান্টের পকেট থেকে ১৮ লাখ টাকার মূল্যের ৩ হাজার ৫৮০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।

র্যাব জানায়, চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানার দক্ষিণ কাট্টলী গ্রামের ফিরোজ খানের ছেলে মো. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী (২৭) ও একই এলাকার মো. বাবরের ছেলে তানভিরুল ইসলামকে (২৫) সাড়ে ৩ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। ১ সেপ্টেম্বর (বুধবার) রাত ৮টায় গ্রেপ্তারের পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে জব্দকৃত মালামালসহ তাঁদের ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।

এসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!