চান্দগাঁওয়ে মধ্যরাতে সশস্ত্র হামলা, জমি দখল করতে গিয়ে পুলিশের জালে ৫

চান্দগাঁওয়ে জোর করে অন্যের জমি দখল ও মারধরের ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গত শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) রাত ১টায় খতিব বাড়ির মসজিদের পাশের সেমিপাকা বসতঘরে এ ঘটনা ঘটে।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনায় ১০ জনের নাম উল্লেখ ও ৫০ থেকে ৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় মামলা করা হয়।

আরও পড়ুন: জমি দখল থেকে অর্থ আত্মসাৎ—চেয়ারম্যান কাজলের সর্বাঙ্গে দাগ

মামলায় প্রধান আসামি করা হয় নগরের দুই নম্বর গেট জিন্নুরাইন কমিউনিটি সেন্টারের মালিক মো. জমির উদ্দিনকে (৫২)।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন হাটহাজারীর নয়ারহাট ইউপির হামিদ আলী বাড়ির আবুল কালামের মেয়ে সানু (৩৯)। তিনি বর্তমানে চান্দগাঁও আবাসিক ১৪ নম্বর রোড এসএম জমির উদ্দিনের কলোনিতে স্বামী মো. আবুল হোসেন সঙ্গে বসবাস করেন। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় চন্দনাইশ পূর্ব ধোপাছড়ি শংকরকুল চৌধুরী বাড়ির মৃত সোলাইমান চৌধুরীর ছেলে মো. সাজ্জাদ হোসেন (৩৭), মহেশখালী বিজয়রাম সর্দারপাড়া ধনরাম দে’র ছেলে প্রদীপ কান্তি দে (৩৫), কুমিল্লা দেবিদ্বার এলাহাবাদ ইউপি খুরাখালের মো. আজগর আলীর ছেলে মো. শরিফুল ইসলাম (২৫) ও ফেনী পরশুরাম অনন্তপুর এলাকার আবু তাহেরের ছেলে মো. সেলিম (৩৬)। তারা সবাই একই কলোনিতে বসবাস করেন।

এজাহারভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- বায়েজিদ অক্সিজেন পুরাতন রোড এলাকার সিরাজ সওদাগরের ছেলে মো. জমির উদ্দিন (৫২), সানুর দুই মেয়ে নাদিয়া ও নাঈমা, আবুল কাশেম (৬০) এবং মো. লোকমান (৫৫)।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, চান্দগাঁওয়ে ৮ শতক সম্পত্তির মালিক প্রবাসী মো. হানিফ (৪৫) ও মো. বাবর (৩০)। ২০১৭ সালে এ জমি কেনার পর তাদের বড় ভাই মাহবুবুল আলম (৬০) আমমোক্তারনামা মূলে এসব সম্পত্তি দেখাশোনা করেন। সেখানে সেমিপাকা ভাড়া ঘর থাকায় ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছিলেন নাছিমা আক্তার (৪৮)। তবে বিবাদীরা দীর্ঘদিন ধরে এসব সম্পত্তি জবর দখল করার পাঁয়তারা করছিলেন।

গত শুক্রবার মধ্যরাতে এজহারভুক্ত আসামিরা বেআইনিভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জমি দখলের জন্য পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। এসময় সেমিপাকা ঘর, বিদ্যুতের মিটার, পানির মিটার, সিসি টিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করেন তারা। ইনচার্জ নাছিমা বাধা দিতে গেলে জমির উদ্দিন তাকে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করেন। এসময় তাঁকে মারধর করে গুরুতর জখম করা হয়।

এছাড়া নাছিমার গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন নিয়ে ফেলেন সানু। এসময় ১টি বিদ্যুতের মিটার, ১টি পানির মিটার, ৩টি সিসি টিভি ক্যামেরা, একটি কম্পিউটার মনিটর, একটি ডিভিআর মেশিন ভাঙচুরে প্রায় ১৬ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। নাছিমার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এলে দুবৃর্ত্তরা হুমকি দিয়ে চলে যায়।

আরও পড়ুন: রাতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার জমি দখল, বিকালে উচ্ছেদ

মামলার বাদী মাহবুবুল আলম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তারা এসব করেছে। ঘটনা জানতে পেরে সেদিন মধ্যরাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে নাছিমাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ভর্তি দেন। এরপর তার চিকিৎসার পর থানায় মামলা করি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মঈনুর রহমান আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, জমি দখল ও মারধরের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছি।

ওসি বলেন, এর আগে এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা করেন ভূমি মালিক। মামলায় ১০ জনের নাম উল্লেখ ও ৫০ থেকে ৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!