চসিক মেয়র—মশার জ্বালায় ‘অস্থির’, নিজেও পাশে রাখেন মশার কয়েল

নগরের বহদ্দারহাটে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বাসভবনে চলছে ঘরোয় বৈঠক। নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাতে সেখানে এসেছেন কাউন্সিলর জেসমিন পারভীন জেসি। সেই বৈঠকেই মেয়রের পায়ের নিচে জ্বলছে মশার কয়েল!

এ একটি ছবিই নগরে মশার উপদ্রব বোঝানোর জন্য পর্যাপ্ত। নগরে ভয়ঙ্করভাবে বেড়েছে মশার উপদ্রব। ঘরে-বাইরে সবখানেই মশার যন্ত্রণা।

২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছিলেন রেজাউল করিম। তখন তিনি বলেছিলেন, আমরা প্রথমে মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করবো।

কিন্তু এরপর এক বছরেও মশা মারার কার্যকর ওষুধ খুঁজে পাননি মেয়র। গত দুবছর মশা মারতে যে ওষুধ ছিটিয়েছিল চসিক, পরীক্ষার পর দেখা গেছে সব ওষুধ ছিল অকার্যকর। অথচ অকার্যকর সেই ওষুধই কেনা হয়েছিল দুই কোটি টাকায়!

আরও পড়ুন: মশা মারার ব্যাটের সুইচ টিপতেই বিস্ফোরণ, মুহূর্তেই দগ্ধ একই পরিবারের ৬ জন

জানা গেছে, মশার ওষুধ কেনার নামে ‘বাণিজ্য’ করতে চসিকের এক কাউন্সিলরের নেতৃত্বে রয়েছে সিন্ডিকেট। নিয়মের দোহাই দিয়ে তারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ওষুধ কিনে।

এদিকে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই মেয়র রেজাউল করিম মশা নিধনে নেন ১০০ দিনের ক্র্যাশ কর্মসূচি। তাঁর সেই কর্মসূচিও পুরোপুরি ‘ফ্লপ’।

ওষুধ ছিটানোর পরও মশা নিধন না হওয়ায় ওষুধের কার্যকারিতা যাচাই করে দেখতে অবশেষে মেয়র শরণাপন্ন হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের। অনুরোধ জানান ওষুধ পরীক্ষা করে দেখার। মেয়রের অনুরোধে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় একটি কারিগরি কমিটি গঠন করে। তারা চসিকে ব্যবহৃত দুটি ওষুধসহ মোট ছয়টি ওষুধ পরীক্ষা করেন। এতে মাত্র একটি ওষুধের কার্যকারিতা পাওয়া যায়!

অকার্যকর ওষুধগুলোর ব্যবহার বন্ধ করে কার্যকর ওষুধটি ব্যবহারের সুপারিশ করেন কারিগরি টিমের বিশেষজ্ঞরা। পরে এটি পরীক্ষামূলক ব্যবহার করলেও ওষুধটি কেনেনি চসিক। চসিক কর্মকর্তারা বলছেন, ওষুধটির ব্যবহারে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাড়পত্র নেই।

মশার উপদ্রব ‘স্বাভাবিক’— হালে মেয়রের এমন মন্তব্যে নগরজুড়ে সমালোচনার ঢেউ উঠে। এরপর কয়েল জ্বালিয়ে মেয়রের ছবিটি ভাইরাল হলে বিভিন্ন দিক থেকে আসতে থাকে বিদ্রূপ মন্তব্য। একজন মন্তব্য করেন— কয়েল জ্বালিয়ে মেয়র নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করেছেন, কিন্তু নগরবাসীকে সুরক্ষা দেবেন কে?

আরেকজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন ছুড়ে দেন—তবে কি মেয়র নিজেও নগরবাসীর মতো মশার কাছে অসহায়?

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!