মশা মারার ব্যাটের সুইচ টিপতেই বিস্ফোরণ, মুহূর্তেই দগ্ধ একই পরিবারের ৬ জন

রাতের খাবার খেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসময় একজন ঘুমানোর আগে মশা মারার জন্য ইলেকট্রিক ব্যাট হাতে নেন। মশা মারতে ব্যাটে চাপ দিতেই হঠাৎ বিস্ফোরণ! কারণ গ্যাসের লাইন লিকেজ থাকায় বাসাজুড়ে জমে ছিল। মশার ব্যাটে চাপ দিতেই স্পার্কে ধরে যায় আগুন। বিস্ফোরণে ঘরের দরজা-জানালা ভেঙে যায়। পুরো ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে মুহূর্তেই দগ্ধ হন সবাই।

নগরের উত্তর কাট্টলী এলাকায় সোমবার (১ নভেম্বর) রাতে অগ্নিদগ্ধের এ ঘটনা ঘটে। গ্যাসের লাইন লিকেজ থেকে আগুনে একই পরিবারের ৬ সদস্য দগ্ধ হন। তারা বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। একই ভবনের একই ফ্ল্যাটে আগেও একবার গ্যাস থেকে আগুন ধরে যায় বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন: হঠাৎ বিস্ফোরণ—উড়ে গেল সিএনজি স্টেশন, অভিযোগের তীর কর্ণফুলী গ্যাসে

আগুনে দগ্ধরা হলেন- মা সাজেদা বেগম (৪৮), ছেলে সানি (২৯), স্বাধীন (১৭) ও জীবন (১৫), মেয়ে মাহি (১০) ও বড় ছেলের স্ত্রী দিলরুবা (২৪)। এর মধ্যে মা সাজেদা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। চমেক পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম আশেক জানিয়েছেন, উত্তর কাট্টলী এলাকা থেকে আগুনে দগ্ধ ছয়জনকে মধ্যরাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এরপর তাদেরকে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

খবর পেয়ে বন্ধুদের নিয়ে আহতদের উদ্ধার করেন স্থানীয় সমাজকর্মী ইরফান রনি। আলোকিত চট্টগ্রামকে তিনি জানান, ৮ সদস্যের পরিবারের কর্তা জামাল শেখ, সাগরিকা শিল্প এলাকার একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটি গার্ড এর চাকরি করেন। ঘটনার সময় তিনি চাকরিতে ছিলেন। আমরা আহতদের সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর পরিবারটির কর্তা জামাল শেখ হাসপাতালে হাজির হন।

এছাড়া মেজো ছেলে ঘটনা যে কক্ষে ঘটেছে সেই কক্ষের বাইরে অন্য কক্ষের টয়লেটে অবস্থান করার কারণে অক্ষত অবস্থায় থেকে যান।

আরও পড়ুন: ‘বিপদ থেকে বাঁচল সীতাকুণ্ড’ গ্যাস সিলিন্ডারের ট্রাক উঠল আইল্যান্ডে

ঘটনা সম্পর্কে আহত বড় ছেলে সানি (২৯) জানিয়েছেন, তারা গত কদিন যাবৎ তাদের ঘরে জ্বালানী গ্যাসের গন্ধ পাচ্ছিলেন। এর আগেও একই ভবনের একই ফ্লাটে অগ্নিকাণ্ডের একটি ঘটনা ঘটেছে, তাই তিনি গ্যাসের গন্ধ পাওয়ার ব্যাপারটি লক্ষ করে ৩-৪ দিন আগে বাড়ির কেয়ার টেকারকে ব্যাপারটি জানান।

কেয়ার টেকার ঘরে এসে চেক করে গেলেও এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেননি বরং নিজে সিগারেট জ্বালিয়ে ভাড়াটিয়াদের আশ্বস্ত করেন যে গ্যাস লিক হচ্ছে না। এর ৩-৪ দিন সোমবার রাতে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল।

চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহির হোসেন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি গ্যাসের লাইন লিকেজ থেকে আগুনে সবাই দগ্ধ হয়েছেন। এরপরও আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি।

এসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!