চট্টগ্রামে বৈঠকে ডেকে কুপিয়ে যুবক খুন, আড়ালে মেম্বারের কারসাজি

বাঁশখালীতে বসতভিটার জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভাই ও ভাইপোদের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ভাইপো সাহাব উদ্দিন (৩৩) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার জন্য মেম্বারকে দায়ী করেছেন নিহত সাহাব উদ্দিনের বাবা।

বুধবার (৮ মার্চ) উপজেলার কাথরিয়া ইউনিয়নের পূর্ব মানিক পাঠান গ্রামের মাইদারীপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে এ ঘটনায় আহত হয়েছেন মো. শাহজাহান (৩৮), মো. শাহ আলম (৩৫) এবং তাদের বাবা এয়াকুব হোসেন (৬২)। আহতরা বাঁশখালী উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সরেজমিন জানা যায়, কাথরিয়ার ৪ নং ওয়ার্ডের পূর্ব মানিক পাঠান গ্রামের মৃত আলমগীর প্রকাশ আন্ডা মিয়ার ছেলে এয়াকুব হোসেন ও নুর হোসেনের সঙ্গে বসতভিটার জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের কারণে এয়াকুব হোসেন কাথরিয়ার ৪ নং ওয়ার্ড ছেড়ে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে ৯ নং ওয়ার্ডে নতুন বাড়ি করে বসবাস করে আসছিলেন। এর মধ্যেও সীমানা ও বসতভিটা সঠিক নির্ধারণ না হওয়ায় প্রায়সময় বিরোধ লেগেই ছিল।

এ নিয়ে উভয়পক্ষের মীমাংসার দায়ভার নেন স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য নোমান চৌধুরী। তিনি উভয়পক্ষকে ৮ মার্চ সকাল সাড়ে ৮টায় সালিসি বৈঠকের সময় দেন। এদিন এয়াকুব হোসেন সালিসি বৈঠকে বসার জন্য তাদের নতুন বাড়ি ৯ নং ওয়ার্ড থেকে বুধবার সকাল ৮টায় ৪ নং ওয়ার্ডে পুরাতন বাড়িতে আসেন। সঙ্গে ছিল তার ছেলে মো. শাহজাহান, শাহ আলম ও মো. সাহাব উদ্দিন।

অপরদিকে প্রবাসী নুর হোসেনও অন্যান্যদের নিয়ে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। সালিসি বৈঠকের শুরুতে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে নুর হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে ভাই এয়াকুবের ওপর আক্রমণ করেন। এ অবস্থায় বাবাকে বাঁচাতে গেলে এয়াকুবের ছেলে মো. সাহাব উদ্দিন (৩৩) ঘটনাস্থলেই চাচা নুর হোসেন ও অন্যান্যদের কিরিচের কোপে খুন হন। ওই সময় মো. এয়াকুব হোসেন এবং তার অপর দুই ছেলে মো. শাহজাহান ও মো. শাহ আলম আহত হয়েছেন।

এদিকে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছেলে হারানোর শোকে কাতর এয়াকুব হোসেন। তিনি বলেন, সাবেক মেম্বার নোমান আমাদেরকে বৈঠকের কথা বলে ডেকে নিয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছেন। আমি কখনো জায়গা চাইনি। কেন আমার ছেলেকে খুন করা হলো? আমি ও আমার ছেলেরা আহত হলাম। এর বিচার চাই আমি।

এ ঘটনার ব্যাপারে জানতে সাবেক ইউপি সদস্য নোমান চৌধুরীর মোবাইলে কল দেওয়ার পর তিনি মোবাইল বন্ধ করে দেন।

যোগাযোগ করা হলে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, বসতভিটার জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনার রেশ ধরে ভাই ও ভাইপোদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারে অভিযানে নেমেছে। নিহত সাহাব উদ্দিনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ইউবি/এসআই

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!