চট্টগ্রামে পুলিশ—ছাত্রলীগ নেতাদের ঘুম পাড়িয়ে শিবিরের ঝটিকা মিছিল

মিছিলটা শুরু যখন—তখনো কাটেনি মানুষের ঘুমের ঘোর। ঘুমিয়েছিল নগর ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগ নেতারাও। দোকানপাটও তখনো ভালো করে খুলেনি। ঠিক তখনই প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চট্টগ্রাম নগরে ঝটিকা মিছিল করেছে ছাত্রশিবির।

ছাত্রশিবির মিছিল করার বিষয়টি বন্দর থানা পুলিশও জানত না, এমন তথ্য মিলেছে পুলিশের কাছ থেকেই। জানা গেছে, মিছিলের কথা শুনে থানা পুলিশের ফোর্স আসার আগেই শেষ হয় মিছিলের সব আয়োজন।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ মিছিল বের করল ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ শাখা।

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) নগরের বন্দর থানার তালতলা সিরাজুল হক এন্ড সন্স ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে মিছিলটি বের হয়।

আরও পড়ুন: শ্রমিক লীগ সভাপতি খুন—সঙ্গীসহ ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার শিবির ক্যাডার তাহের

সকাল ৭টা ২০ মিনিটে জড়ো হয় শিবিরের নেতাকর্মীরা। এরপর মিছিলটি চট্টগ্রাম বন্দর পূর্ব আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ সামনে ইউটার্ন নেয়। তারপর আবারও তালতলা সিরাজুল হক এন্ড সন্স ফিলিং স্টেশনের সামনে এসে শেষ হয়।

স্থানীয়রা জানান, শিবিরের মিছিলের স্পট থেকে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের বাড়ির ব্যবধানও মাত্র এক কিলোমিটারের। জাকারিয়ার বাড়ি একই ওয়ার্ডের বাচাশাহ মাজার এলাকায়।

এ ব্যাপারে জানতে সিএমপির বন্দর থানার ওসি জাহেদুল কবিরকে একাধিকবার ফোন করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এছাড়া সাড়া পাওয়া যায়নি নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের মুঠোফোনেও।

আরও পড়ুন: ১০ তলা বিল্ডিং উঠল ছাড়পত্র ছাড়াই, হঠাৎ ঘুম ভাঙল পরিবেশের

এর আগে ২০২১ সালে সকাল ৮টায় নগরের পাহাড়তলী থানার ডিটি রোড আবুল বিড়ি ফ্যাক্টরির সামনে জড়ো হয়েছিল শিবিরের নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে মিছিলটি পাহাড়তলী বাজার মোড়ে গিয়ে হয়। মিছিল শেষে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়েছিল।

ছাত্রসংঘ থেকে ছাত্রশিবির
একাত্তর সালের আগে জামায়াতের এই ছাত্রসংগঠনের নাম ছিল ইসলামী ছাত্রসংঘ। ১৯৭৭ সালে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নাম পাল্টে হয়ে যায় ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির’। ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আত্মপ্রকাশ করে ছাত্রশিবির।

যুদ্ধাপরাধে শিবির
উত্তাল একাত্তরে যুদ্ধাপরাধে যুক্ত ছিল ছাত্রসংঘ তথা আজকের ছাত্রশিবির। হানাদার বাহিনীর হয়ে তারা নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছিল মুক্তিকামী বাঙালির ওপর। স্বাধীনতার পরও থামেনি তাণ্ডব। একাত্তরের ছাত্রসংঘ স্বাধীনতাপরবর্তী সহিসংসতা ছড়ায় ছাত্রশিবির নামে। ছাত্রদের রগ কেটে দিয়ে, পুলিশের গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে, ইট দিয়ে পুলিশের মাথা থেতলে দিয়ে, পেট্রোল বোমা মেরে আগুন জ্বালিয়ে অসংখ্যা খুনের অভিযোগ রয়েছে শিবিরের বিরুদ্ধে।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!