এক পারভীনের—শত রূপ, আটকে গেলেন পুলিশের জালে

‘প্রতারক’ পারভীন আক্তার (৫৪)। তিনি কখনো গার্মেন্টস মালিক, আবার কখনো এনজিওর মালিক। একেকজন চিনেন তাঁকে একেক পরিচয়ে। এসব পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্নজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। প্রতারণাই যার নেশা ও পেশা।

শুধু জিয়াউল হক নয়। হালিশহর এলাকার অনেক মানুষের কাছ থেকে এনজিওর মালিক পরিচয়ে লাখ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন ওই নারী।

প্রতারণার মামলায় ওই নারী গ্রেপ্তার হয়েছেন একাধিকার। কিন্তু বের হয়ে আবারও ফিরে আসেন সেই পুরনো পেশায়। তাঁর বিরুদ্ধে পাহাড়তলী থানায় অর্থঋণ আদালতে ১টি, পাঁচলাইশ থানা এলাকার ডাকাতি মামলার ১টিসহ ২টি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।

আর পড়ুন: পুলিশ পেল বাসার সানসিট বক্সে, প্রতারক লুকিয়ে ছিল বিদেশ থাকার সাজানো গল্পে

এবারও তাঁকে প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। এর আগে একবার র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) নগরের জুবিলী রোড এলাকার গোলাম রসুল মার্কেটের সামনে থেকে তাঁকে প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার পারভীন নগরের পাহাড়তলী এলাকার পুরান হরিদাশ রোডে নেভী ভিলার বাসিন্দা। তাঁর স্বামীর নাম মো. জহিরুল ইসলাম।

পুলিশ জানায়, গত বছরের ২৫ নভেম্বর নগরের তিনপুলের মাথা এলাকায় ইলেকট্রনিক ব্যবসায়ী মো. জিয়াউল হক ভূঁইয়ার কাছে পণ্য কিনতে যান প্রতারক পারভীন। এ সময় তিনি নিজেকে স্বীকৃতি এ্যাপারেলস নামক গার্মেন্টসের মালিক পরিচয় দেন এবং কারখানার ব্যবসায়িক অংশীদার বানানোর কথা বলেন। পরে চুক্তিনামা করে বিভিন্নভাবে ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সাড়ে ১৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। এরপর তাঁর সাথে কিছুদিন মোবাইলে যোগাযোগ করে আত্মগোপন চলে যান ওই প্রতারক নারী। কয়েকদিন আগে জিয়াউল সরেজমিন পাহাড়তলী এলাকার স্বীকৃতি অ্যাপারেলসে গেলে সেটি বন্ধ দেখতে পান। পরে তাঁর সন্দেহ হলে তিনি সিটি করপোরেশনে ট্রেড লাইসেন্সের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে জানতে পারেন কর্তৃপক্ষের সিল ও স্বাক্ষর দুটোই জাল। এরপর প্রতারক ওই নারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী।

আরও পড়ুন: সাজা কাঁধে নিয়ে ছদ্মবেশে ৮ বছর লুকিয়েও ধরা খেল পুলিশের হাতে

এদিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানতে পারে শুধু জিয়াউল হক নয়, হালিশহর এলাকার অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে এনজিওর মালিক পরিচয়ে লাখ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন ওই নারী।

এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন জানান, গ্রেপ্তার নারী একজন প্রতারক। তিনি কখনো গামের্ন্টস মালিক, কখনো এনজিওর মালিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পরে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। ওই নারী এর আগেও প্রতারণার অভিযোগে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি তার পিতা-মাতার নাম ও ঠিকানা একেক সময় একেক রকম বলে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন।

আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!