আনোয়ারার বড় বড় জলাশয়গুলো এখন ভিনদেশি পাখির কলকাকলিতে মুখর। প্রতিবছর শীতে হাজার হাজার মাইল পথ পেরিয়ে এখানে আসে অতিথি পাখির দল। এখানকার বড় বড় পুকুর ও দিঘিগুলো ভরে যায় অতিথি পাখিতে। এসব পাখি দল বেঁধে জলাশয়ে নেমে মনের সুখে সাঁতরে বেড়ায়। ভোর হলেই পাখির ঝাঁক কিচিরমিচির শব্দে পানিতে নেমে ডানা ঝাপটিয়ে খেলা করে।
এদিকে বঙ্গোপসাগর উপকূলে সাগরের স্নিগ্ধ বাতাসে ঢেউয়ের তালে তালে অতিথি পাখির উড়ে বেড়ানোর দৃশ্য নজর কাড়ছে পর্যটকদের। এখন স্থানীয়দের সকাল হয় অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে।
উপজেলার মনু মিয়ার দিঘি, সুরতবিবির দিঘি, পদ্মাপুকুর, খাসখামা ও গুজুরা দিঘি ঘুরে দেখা যায় পাখি। যার মধ্যে রয়েছে জলপিপি, রাজসরালি, লালবুবা, পানকৌড়ি, বক, শামুককনা, চখপখিম, সারস, কাইমা, শ্রাইক, হরিয়াল, নারুন্দি, মানিকজোড়া, বালিহাঁস, পাতিহাঁস, লেজহাঁস, পেরিহাঁস, চমাহাঁস, গাং কবুতর, বনহুর, সাগর কৈতর, সি-গালসহ হরেক প্রজাতির দেশি-বিদেশি পাখি। এসব পাখি ঝাঁকবেঁধে উড়ে বেড়াচ্ছে পুকুর-দিঘিতে। অতিথির পাখির খেলা দেখতে সকাল-বিকেল দিঘিগুলোর আশপাশে ভিড় জমাচ্ছে প্রকৃতিপ্রেমীরা।
মূলত শীতের শুরুতেই হাজার হাজার মাইল পেরিয়ে আসে অতিথি পাখির দল। উপজেলাজুড়ে শুরু হয় অন্যরকম এক উৎসব। তবে শীত চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উধাও হয়ে যায় অতিথি পাখি।
পাটনীকোঠা এলাকার প্রীতম সুশীল বলেন, পাটনীকোঠা দত্তরহাটের পাশের দিঘিটাতেই ছোটকাল থেকেই শীত মৌসুমে অতিথি পাখি দেখে আসছি। শীতের শুরুতে পাখিগুলো আসে। একটু একটু গরম পড়তে শুরু হলেই পাখিগুলো চলে যায়। আমার ঘর থেকে সকাল-বিকাল পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনতে পাই। দল বেঁধে তাদের উড়ে বেড়ানোর দৃশ্য দেখতে ভীষণ ভালো লাগে।
উপকূলে ঘুরতে আসা হাবিবা জান্নাত নামে এক পর্যটক বলেন, শীতে সাগর দেখতে আসার অনুভূতিটাই ভিন্ন রকম। কারণ এসময় সাগর দেখার পাশাপাশি নানারকমের পাখিও দেখা যায়৷ তাই অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতেই বেশি সাগর দেখতেআসা হয়। বিশেষ করে সাগর উপকূলে উড়ে বেড়ানো গাঙচিল দেখতে খুবই চমৎকার লাগে।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল চন্দ্র দাস আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, প্রতিবছর শীতের শুরু থেকেই উপজেলায় অতিথি পাখির বিচরণ লক্ষ্য করা যায়। কেউ যাতে এসব পাখি শিকার করতে না পারে সেজন্য আমরা মাঠপর্যায়ে মানুষকে সচেতন করা ছাড়াও নানা ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।
এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম