জামালখানে ‘সম্প্রীতি’র কনসার্ট, চসিক কাউন্সিলরের কাণ্ডে সমালোচনার ঝড়

সহিংসতা ও অশুভ তৎপরতার বিরুদ্ধে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে আয়োজন করা হয় সম্প্রীতি উৎসব। শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় জামালখানের এম এ হাসেম স্কয়ার চত্বরে এ আয়োজন করেন স্থানীয় কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন।

এদিকে জামালখানের ‘ওপেন এয়ার কনসার্ট সম্প্রীতি উৎসব’ ঘিরেই এখন বইছে সমালোচনার ঝড়। সম্প্রীতির উৎসবে হৈচৈ, নাচানাচি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই করেছেন কড়া সমালোচনা। স্ট্যাটাসে স্ট্যাটাসে অনেকেই উগলে দিয়েছেন ক্ষোভ।

এমন সম্প্রতির উৎসবকে রংবাজি উল্লেখ করে এখানে কিশোর গ্যাংয়ের লাফালাফি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন এক সিনিয়র সাংবাদিক। যারা এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন তারা কতটুকু অসাম্প্রদায়িক তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

আরও পড়ুন: হিন্দুদের তীর্থস্থানে নামাজ পড়ে ‘উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস’, আটক সেই যুবক

সমালোচকরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দেড় শতাধিক মঠ-মন্দির ভেঙেছে সাম্প্রদায়িক দুর্বৃত্তরা। সর্বস্ব খুইয়েছে অনেক হিন্দু পরিবার। সেই সঙ্গে গেছে প্রাণও। এখনো সেই হামলার দগদগে ক্ষত বইয়ে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগীরা। হামলার প্রতিবাদে এখনো উত্তাল রাজপথ। সমবেদনা জানানোর এই সময়ে জামালখানে বিনোদনের আয়োজন কেন?

তারা বলেন, যে টাকা দিয়ে নাচ-গানের আয়োজন করা হলো সেই টাকা যদি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের দেওয়া হতো তাহলে তাদের দুঃখ কিছুটা হলেও লাঘব হতো।

চট্টগ্রামের সিনিয়র আলোকচিত্র সাংবাদিক উজ্জল কান্তি ধর নিজের ফেসবুকে লিখেন— জামালখানে সম্প্রীতি উৎসবের নামে চলছে রংবাজি। যারা অংশ নিয়েছে তারা কতটুকু অসাম্প্রদায়িক তা প্রশ্নবিদ্ধ। এই উৎসব কিছু কিশোর গ্যাং নামে পরিচিতদের লাফালাফি ছাড়া আর কিছুই নয়। অন্তত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাজনিত কোনো ফলই আসবে না ১০০%। সনাতনীদের আবেগ, বিশ্বাস আর নিরাপত্তা নিয়ে এ কোন খেলা।

অংকন বৈদ্য নামে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্ট্যাটাস দেন— সবদিকে প্রতিমা ভাঙচুর হলো, মানুষের ঘরবাড়ি পুড়ে নিঃস্ব হলো, ধর্ম রক্ষা করতে গিয়ে মানুষ প্রাণ দিলো, আর এদিকে আমাদের জামালখান সম্প্রীতি কনসার্ট করে নাচ-গান করে, এমন হিন্দুদের লজ্জা-শরম থাকা উচিত। ছি!

ছাত্রনেতা লিপটন দেবনাথ লিপু লিখেন— যে টাকা দিয়ে নাচগানের আয়োজন সে টাকা যদি অসহায় মানুষগুলোকে দেওয়া হতো তাহলে তাদের দুঃখের কিছুটা অবসান হতো। বিবেক বিপন্ন-বিস্ময় মানবতা।

আবার আলোকচিত্র সাংবাদিক কমল দাশ কমেন্টে লিখেন—এসব নাটক দেখে অবাক হলাম।

শুভঙ্কর সূত্রধর নামে এক চাকরিজীবী স্ট্যাটাস দেন—সেই কনসার্টে কি শোনা যায় স্বামীহারা আর পিতাহারা শিশু সন্তানের আর্তনাদ। প্রশ্ন রইল?

কলেজশিক্ষার্থী প্রান্তি ভট্টাচার্য কমেন্ট করেন— দিনে আন্দোলন করবো রাতে বিনোদন নিবো।

আরও পড়ুন: সম্প্রীতি সুরক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর অবস্থানে যেতে হবে : আ জ ম নাছির

ব্যবসায়ী রুবেল সাহা লিখেন—সুমনকে বয়কট করা উচিত হিন্দু নেতা হিসেবে।

এর আগে গত ২৮ অক্টোবার জুয়েল আইচ নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী স্ট্যাটাস দেন—‘আজ আমাদের হৃদয় যখন বেদনায় হাহাকার দাদার আয়োজনে সুখে গান শোনাচ্ছেন বটতলায়।’

পরদিন ২৯ অক্টোবর বিকেলে তিনি লিখেন— আমরা কি বিচার পাবো, আমাদের তো নাচে-গানে বেলা শেষ!

আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!