পটিয়ায় ইয়াবাসহ আটকের পরদিন জানা গেল তিনি চকরিয়ার চাঞ্চল্যকর খুনের মামলার আসামি!

পটিয়ায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে ইয়াবাসহ আটক হন মিজানুর রহমান মিজান (৪২) নামে এক যুবক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ল আসল ঘটনা। এই সেই মিজান, যাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে র‌্যাব-পুলিশ। কারণ তিনি যে চকরিয়ার চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ খুনের মামলার আসামি!

১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে তাকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আটক করলেও মামলা দায়েরের পর পটিয়া থানায় সোপর্দ করা হয় পরদিন (১৫ জানুয়ারি) রাতে।

মিজানুর রহমান মিজান ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার বালকদিয়া বিনয়কাঠি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মৃত জলিল আকনের ছেলে।

এর আগে গত ৭ জানুয়ারি বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পৌরশহরের চিংড়ি চত্বর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় হত্যাকাণ্ডের সন্দেহজনক আসামি মো. নয়নকে (৩০) । সে চকরিয়া পৌরশহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নামার চিরিঙ্গার মুজিবুর রহমানের ছেলে। চকরিয়া পৌর শহরের চিহ্নিত এ সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে ছিনতাই, লুটপাট, মারামারিসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

আরও পড়ুন: টার্গেট প্রবাসীরাই—খুন করে লুট, ওঁৎ পেতে থাকে অপরাধী চক্র

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সড়কে লতিফ উল্লাহর কোমল পানীয়সহ বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিকাশ এজেন্ট রয়েছে। ৩ জানুয়ারি রাতে ফোন করে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে খুন করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয় লোকজন লতিফকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ খুনের পর থেকে একটি মোবাইল নাম্বারের সুত্র ধরে র‌্যাব থেকে শুরু করে পুলিশের একাধিক টিম হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায়। ১৪ জানুয়ারি অন্যতম আসামি মিজানুর রহমান মিজানকে ৫শ পিস ইয়াবাসহ আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি টিম। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে তাকে পটিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়। এরপর পুলিশ নিশ্চিত হয় ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার মিজানেই ব্যবসায়ী লতিফ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামী।

চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মু. জুয়েল ইসলাম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ব্যবসায়ী লতিফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে এর আগে নয়নকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশকিছু তথ্য পাওয়া গেছে তার কাছ থেকে। মিজানের নাম্বারে লতিফ উল্লাহর বিকাশ এজেন্ট থেকে ৩০হাজার টাকার লেনদেনও হয়। এরপর ওই এলাকার বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ ও মিজানের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল সেটের কল রেকর্ডের সূত্র ধরে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তারে পুলিশসহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাঠে নামে। মোবাইলে পটিয়া থানায় সর্বশেষ লোকেশন নিশ্চিত হয় পুলিশ।

আরও পড়ুন: চকরিয়ায় নৌকার দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ জামানত হারালেন ২৬ জন

তিনি আরও বলেন, পরে পটিয়া থানা পুলিশ আদালতের মাধ্যমে তাকে চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে পাঠায়। কিন্তু পুলিশের মোবাইল ট্র্যাকিংয়ে বারবার পটিয়া থানা দেখা যায়। পরে পটিয়া থানা পুলিশের মাধ্যমে নিশ্চিত হই মোবাইলটি মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া মিজানের।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গণি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। তাকে শিগগির চকরিয়া আদালতে এনে রিমান্ড চাওয়া হবে। রিমান্ডে নেওয়ার পর ঘটনার আসল রহস্য উদ্ঘাটন হবে।

মুকুল/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!