হাসপাতালে কাতরাচ্ছে আ. লীগ নেতার ঘরে পুড়ে যাওয়া নারী, ‘ভয়’ দেখাচ্ছেন চসিক কাউন্সিলর

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর হুরে আরা বিউটি এবং তার বাবা নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি একেএম বেলায়েত হোসেনের বাসায় গৃহকর্মী গ্যাসের চুলায় আগুনে দগ্ধ হয়েছেন।

রেনু বেগম (২৬) নামে ওই গৃহকর্মী বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সকালে হালিশহর থানাধীন বি ব্লক ২ নম্বর লেইনে কাউন্সিলরের বাসভবনে এ ঘটনা ঘটে।

আহত রেনু বেগমের বড় ভাই তোফাজ্জেল হোসেন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ‘আমার বোন রেনু বেগম মহিলা কাউন্সিলর হুরে আরা বিউটি এবং চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বেলায়েত হোসেনের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেন। ঘটনার আগের রাতে বেলায়েত সাহেব গ্যাসের চুলা পুরোপুরি বন্ধ না করায় পুরো রান্নাঘর গ্যাসে ভরে যায়। সকালে রেনু চা বানানোর জন্য চুলায় আগুন দিতেই তার পুরো শরীরে আগুন ধরে যায়। সে এখন চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার শরীরের ৭০% পুড়ে গেছে। সে এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তার ছোট-ছোট তিন বাচ্চা আছে। এখন সে যদি মারা যায় তার বাচ্চাদের কী হবে?’

তিনি বলেন, রেনুকে গুরুতর আহত অবস্থায় চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মহিলা কাউন্সিলর হুরে আরা বিউটি এ ঘটনা কাউকে না জানাতে বলেন। যত রকমের আর্থিক সহযোগিতা লাগে তিনি তা করবেন বলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, গত তিনদিনের মধ্যে মাত্র একদিন এসেছেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে হুরে আরা বিউটির এক প্রতিবেশী বলেন, রেনু বেগম দগ্ধ হওয়ার ঘটয়া ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখান হুরে আরা বিউটি। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে বের করে দিব যদি মিডিয়ার কাউকে ছবি তুলতে দিস ও কারো কাছে কিছু বলিস। এসব কথা বলে তার ছোট ভাইকেও হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই বিষয়ে মহিলা সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১১, ২৫ ও ২৬নং এর কাউন্সিলর হুরে আরা বিউটিকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

তবে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি একেএম বেলায়েত হোসেন। তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ভুলবশত গ্যাসের চুলা বন্ধ না করার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে রেনুকে সার্বিক সেবা দেওয়া হচ্ছে।

মিডিয়াকে তথ্য না দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। এছাড়া ওই নারীকে ভয় দেখানোর অভিযোগও সত্য নয় বলে দাবি করেন তিনি।

রানা/এসআই

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!