নগরে শীতের শুরুতে সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরলেও এখন অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ ক্রেতাদের। বেড়েছে অধিকাংশ সবজির দাম। এছাড়া কয়েকদিনের ব্যবধানে মুদি সামগ্রীর দামও অনেক বেড়ে গেছে। এছাড়া মুরগির বাজারেও বিরাজ করছে অস্থিতিশীলতা। বেড়েছে আদা-রসুনের দামও।
নগরের চকবাজার, রাহাত্তারপুল, কালামিয়া বাজার ও বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, বেগুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫-৫৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৩৫-৪০ টাকা দরে।
ভরা মৌসুমেও শিম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। তিত করলার কেজি ৮০ টাকা, যা ৩/৪ দিন আগেও বিক্রি হয়েছিল ৭০ টাকা। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজি ১০০-১২০ টাকা, ৮/১০ দিন আগেও বাজারে এ মরিচ বিক্রি হয়েছিল ৬০-৭০ টাকা।
বাজারে ফুলকপির কেজি ৪০-৪৫ টাকা ও বাঁধাকপি ২৫-৩০ টাকা। চলতি মাসের শুরুতেও এ সবজি দুটি প্রতি কেজি ১৫-২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল।
এছাড়া মুলার কেজি ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০-৩৫ (পাকা) টাকা ও ৪০-৪৫ (কাঁচা) টাকা, শসা ও গাজর ৫০ টাকা, টমেটো ৫০-৬০ টাকা, লাউ ২০ টাকা, নতুন আলু (হাইব্রিড) ২০-৩০ টাকা এবং নতুন আলু (দেশি) ৬০-৭০ টাকা।
বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের ক্রেতা মো. ইয়াছিন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, শীতকালে স্বাভাবিকভাবে বাজারে সবজির সরবারহ বেশি থাকে, তাই দাম অন্যান্য সময়ের তুলনায় কম থাকে। আবার শীতে মানুষের কাছে সবজির চাহিদা থাকে বেশি। এবার শীতের শুরুতে সবজির দাম কিছুটা কম ছিল। কিন্তু শীতে সবজির বেশি চাহিদাকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা এখন দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এজন্য আমি দায়বদ্ধতার অভাবকে দায়ী বলে মনে করি। যদি সরকারি বাজার মনিটরিং সংস্থাগুলো নিয়মিত বাজার মনিটর করতো তাহলে ব্যবসায়ীরা এভাবে মনগড়া দাম বাড়াতে পারতো না।
এদিকে মুদি বাজারেও বিরাজ করছে অস্থিতিশীলতা। মাত্র ২/৩ দিনের ব্যবধানে প্রায় ৬৫ শতাংশ বেড়েছে রসুনের দাম। বর্তমানে বাজারে রসুন বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৮০-১৯০ টাকা, যা ২/৩ দিন আগেও বিক্রি হয়েছিল ১১০-১২০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে আদার দাম বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। খুচরা বাজারে আদা বিক্রি হচ্ছে কেজি ২২০-২৩০ টাকা, সপ্তাহখানেক আগেও আদা বিক্রি হয়েছিল কেজি ১৩০-১৪০ টাকা দরে।
ছোলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০ টাকা, যা কিছুদিন আগেও বিক্রি হয়েছিল ৭০ টাকা। শুকনা লাল মরিচ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা। মসুর ডালের কেজি ৯৫-১০০ (মোটা) টাকা ও ১৪০ (চিকন) টাকায়। এছাড়া ইন্ডিয়ান পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৩৫ টাকা এবং মটর ডাল কেজি ৬৫-৭০ টাকা দরে।
মুদি ব্যবসায়ী মো. পারভেজ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, কিছুদিন ধরে বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম আবারো বাড়তে শুরু করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় লাফটা দিয়েছে রসুন। ২/৩ দিন আগে যে রসুন আমরা কেজি ৯০-৯৫ টাকা দরে পাইকারি বাজার থেকে কিনেছি, আজকে সেই রসুনের দর ১৫৫ টাকা। খুচরা মূল্যে আমরা ১৭৫-১৮০ টাকা বিক্রি করছি। একইভাবে ছোলা, আদা, শুকনা মরিচের দামও বেড়ে গেছে। তবে শীতকালে মানুষের কাছে বিভিন্ন ধরণের সবজির চাহিদা বেশি থাকে, তাই ডালের চাহিদা এসময় একটু কম থাকে। তাই হয়ত মসুর ডাল, মটর ডালের দাম শীতে এখনো বাড়েনি।
এদিকে সবজির বাজার ও মুদি সামগ্রীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাজারে বেড়েছে হাঁস-মুরগির দামও। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৩৫-১৪০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি ২৫০ টাকা, কয়েকদিন আগেও এ মুরগি বিক্রি হয়েছিল ২২০-২৩০ টাকা দরে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়ে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি ৪৫০ টাকা। বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে হাঁসের দাম কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০০ টাকা।
এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম