যে কারণে সাগরিকায় উড়ল লাল-সবুজের পতাকা

চট্টগ্রামের সাগরিকায় দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা। সিরিজের শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৫০ রানে হারিয়েছে তারা। বাংলাদেশ দলের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সেই এই জয় এসেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

৬ বছর পর ফের বাংলাদেশে খেলতে আসা আসা ইংল্যান্ড দল অবশ্য তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দুটিতে জয়লাভ করে আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছিল।

সোমবার (৬ মার্চ) চট্টগ্রামের জহুর আহম্মেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ ও তৃতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয় দুদল।

এদিকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বাঁচলেও টাইগারদের গেল সাত বছর ঘরের মাঠে সিরিজ জয়ের রেকর্ড ভেঙে দিল ইংলিশরা।

সাকিব–মুশি–শান্তর ব্যাটিং নৈপুণ্য ও সাকিবের স্পিন ঘুর্ণিতে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। এদিন দুপুরে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নেমে তামিম ও লিটন দ্রুত ফিরে গেলেও শুরুতেই চাপের মুখে পড়ে ব্যাটাররা।

তবে আসা-যাওয়ার সেই চাপ সামলে বাংলাদেশকে সম্মানজনক স্কোরে নিয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। তিনজনের ব্যাট থেকে আসে ১৯৮ রান। এর মধ্যে সাকিব করেন ৭১ বলে ৭৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। সিরিজে নিজের দ্বিতীয় অর্ধশত রান তোলেন বাংলার পোস্টার বয়৷ মুশির ব্যাট থেকে আসে ৯৩ বলে ৭০ রান। কিছুটা বল বেশি খেললেও সিরিজের দ্বিতীয় অর্ধশতক হাকান নাজমুল হোসেন শান্ত। ৭১ বল খেলে তিনি করেন ৫৩ রান৷

আরও পড়ুন: চেনা সেই ১১ ক্রিকেটারের ভাস্কর্য এবার যাচ্ছে সাগরিকায়, অযত্নেই ছিল নিমতলায়

সাকিব-মুশির পর আর কেউ থিতু হতে পারেনি উইকেটে৷ শেষ মুহূর্তে যা হয়েছে তা শুধুই নিয়ম অনুযায়ী যাওয়া-আসা। শেষদিকে সবাই উইকেট বিলিয়ে দিলে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষ করার আগেই ইনিংস শেষ হয় ২৪৬ রানে।

এদিকে ইংল্যান্ডের হয়ে বরাবরের মতো দুর্দান্ত পেস স্পেলে তিন উইকেট তুলে নেন পেসার জোফরা আর্চার৷ দুটি করে উইকেট নেন স্যাম ক্যারান ও আদিল রশিদ।

২৪৭ রানের জবাবে ব্যাট করতে নামা ইংলিশদের শুরুতেই চাপে ফেলেন দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান । সাগরিকায় তৃতীয় ম্যাচে দিনের শুরুতে দর্শক না থাকলেও শেষ বিকেলে মাঠে বাড়ে দর্শকদের উপস্থিতি।

সাকিবের স্পিন ঘূর্ণিতে একে একে কাটা পড়ে ইংলিশ ব্যাটাররা। নবম ওভারে সাকিবের স্পিনের শিকার হন জেসন রয়। ৩৩ বলে ১৯ রান করে আউট হন এই ওপেনার৷ ফিল সল্ট ও জেমস ভিন্সও সাজঘরে সাকিবের ঘূর্ণি জাদুতে৷

দারুণ ব্যাট করতে থাকা সল্ট ২৫ বলে ৩৫ রানে থামেন। ভিন্স আউট হন ৩৮ রানে। প্রথম দশ ওভারে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫৫ রান।

১৩০ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ইংলিশদের কেউ। নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষ হওয়ার আগেই সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৯৬ রানে গুটিয়ে যায় ইংলিশরা৷ ফলে ৫০ রানে জয় তুলে নেয় টাইগাররা।

বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেন সাকিব আল হাসান। ১০ ওভার বল করে ৪ ইকোনমিতে ৩৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন দেশ সেরা এই অলরাউন্ডার। সেইসঙ্গে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৩০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। তাইজুল ও এবাদত হোসেন তুলে নেন দুটি করে উইকেট। মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুস্তাফিজ শিকার করেন একটি করে উইকেট। ম্যাচ শেষে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ পুরস্কার পান সাকিব আল হাসান।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাট-বলের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের কারণেই মূলত জয়টা পেয়েছে বাংলাদেশ। শান্ত-মুশফিক-সাকিবের তিন ফিফটি দলকে ফাইটিং স্কোর এনে দেয়। আবার বোলিংয়ে ৫ বোলারের সবার নামের পাশেই আছে উইকেট।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!