মিতুল খুনে চসিক কাউন্সিলরের স্ত্রীকে খুঁজছে পুলিশ—‘সাজা কমাতে’ আত্মহত্যার মিশনই চূড়ান্ত

২০১৭ সালের ২২ ডিসেম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল আমিন কালুর ছেলে নওশাদুল আমিনের সঙ্গে বিয়ে হয় রেহেনুমা ফেরদৌস মিতুলের। কিন্তু বিয়ের সাড়ে চার বছর যেতে না যেতেই আড়াই বছরের মেয়ে আরিবাকে রেখে লাশ মিতুল। শ্বশুরবাড়ির দাবি, আত্মহত্যা করেছে মিতুল।

তবে এ কথা মানতে নারাজ মিতুলের পরিবার। তাদের দাবি, পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে মিতুলকে। এ অবস্থায় ‘আত্মহত্যা’ আর ‘খুনের’ রহস্যে দুলছে মিতুলের মৃত্যু।

এদিকে মৃত্যুর ১৮ ঘণ্টা আগে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন কাউন্সিলরের পুত্রবধূ মিতুল। যেখানে তিনি লিখেন— ‘কথার আঘাত ছুরির চেয়েও ধারালো’।

অপরদিকে ঘটনার পর থেকে পলাতক কাউন্সিলর নুরুল আমিন কালুর স্ত্রী পপি বেগম। অপরদিকে কাউন্সিলরের ছেলে মিতুলের স্বামী নওশাদুল আমিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: চসিক কাউন্সিলর পুত্রবধূর লাশ ঘিরে ‘রহস্য’—পরিবার বলছে, হত্যাকে আত্মহত্যার ‘সাজানো গল্প’

আজ (রোববার) সকালে নওশাদুল আমিনকে বিচারক ওলিউর রহমানের আদালতে হাজির করা হয়। এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিনের আবেদন করলে আদালত নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

জানা যায়, মিতুলের পারিবারিক সমস্যা সমাধানে বেশ কয়েকবার সমঝোতা বৈঠক করেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির। কিন্তু এতে তাদের মন গলেনি। উল্টো মিতুলের ওপর বেড়েছে নির্যাতন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিতুলের লাশ উদ্ধারের পর থেকেই পলাতক কাউন্সিলরের স্ত্রী পপি বেগম। আত্মহত্যার অভিযোগে করা মামলায় কাউন্সিলর পুত্র নওশাদুল আমিনকে প্রধান ও স্ত্রী পপি বেগমকে করা হয় দ্বিতীয় আসামি।

এ বিষয়ে পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, মিতুল নিহতের ঘটনায় করা মামলার দ্বিতীয় আসামি কাউন্সিলরের স্ত্রী পপি বেগম ঘটনার পর থেকে পলাতক আছেন। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

জানতে চাইলে নিহতের চাচা তারেক ইমতিয়াজ ইফু আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, মিতুলের স্বামী ও শ্বাশুড়ির নামে মামলার পর স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হলেও পলাতক শাশুড়ি। এতে কি প্রমাণিত হয় না এটি পরিকল্পিত হত্যা?

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের ১২নং সরাইপাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল আমিন কালু আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমার স্ত্রীর নামে যেহেতু মামলা হয়েছে তাই সে একটু নিরাপদ জায়গায় রয়েছে। তবে পলাতক এই কথাটি সত্য না।

আরও পড়ুন: বোনের সঙ্গে ঝগড়া করে হারপিক খেয়ে মৃত্যুর পথে গেল কিশোরী

এদিকে কাউন্সিলরের এক প্রতিবেশী নাম প্রকাশ না করার শর্তে আলোকিত চট্টগ্রামকে জানান, প্রায়সময় শাশুড়ি পপি বেগমের সঙ্গে মিতুলের ঝগড়া হতো। ঘটনার পর থেকেই শাশুড়ি গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ঘটনার পেছনে তার হাত না থাকলে তিনি পলাতক কেন?

প্রসঙ্গত, গত ২ জুলাই (শনিবার) সকালে কাউন্সিলর নুরুল আমিন কালুর ঘর থেকে পুত্রবধূ রেহেনুমা ফেরদৌস মিতুলের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!