চট্টগ্রামে রোববার থেকে শিশুদের খাওয়ানো হবে লাল—নীল ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল

চট্টগ্রাম জেলার ৮ লাখ ২০ হাজার ৩৭৫ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। আগামী রোববার (১২ জুন) থেকে শুরু হয়ে বুধবার (১৫ জুন) পর্যন্ত টানা ৪ দিন চলবে এই কার্যক্রম।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) দুপুর ৩টায় সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় এ তথ্য জানান চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী।

কর্মশালায় জানানো হয়, চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার ২০০ ইউনিয়নের ১৫টি স্থায়ী কেন্দ্র ও ১৫টি ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রসহ মোট ৪ হাজার ৮০০ কেন্দ্রে শিশুদের প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

আরও পড়ুন: নগরের ৫ লাখ ৩২ হাজার শিশু পাবে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল

এছাড়া বিমানবন্দর ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমেও এই ক্যাপসুল খাওয়ানোর কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এসময় ৬ মাস থেকে ১১ মাস বয়সী ৯১ হাজার ৮৬২ জন শিশুকে খাওয়ানো হবে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল। এছাড়া ১ বছর থেকে ৪ বছর ১১ মাস বয়সী ৭ লাখ ২৮ হাজার ৫১৩ জন শিশুকে খাওয়ানো হবে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল।

চট্টগ্রাম জেলার এ ক্যাম্পেইনে ৩৯ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ১৩৬ জন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ৫৪০ জন স্বাস্থ্য সহকারী, ৬৮৬ জন পরিবার পরিকল্পনা সহকারী, ১৫৩ জন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, ৯ হাজার ৬৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক, ১৫ জন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর, ৫০৯ জন সিএইচসিপি ও ৮২ জন স্যাকমো দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।

সভাপতির বক্তব্যে সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ অপুষ্টিতে ভোগা শিশুরা বর্তমান সময়ে খুবই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এই ক্যাম্পেইন সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে অপুষ্টির সমস্যা দূর করা যাবে। কারণ ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শিশুর অপুষ্টি, অন্ধত্ব প্রতিরোধ, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত, হাম ও ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর হার হ্রাসসহ সকল ধরণের মৃত্যুর হার হ্রাস করে। কোনো শিশু যেন ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়া থেকে বাদ না পরে সেদিকে সবাইকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।

এছাড়া শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হয়ে গেলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পুষ্টি সমৃদ্ধ সুষম খাবার খাওয়াতে হবে। পরিবারের রান্নায় ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ভোজ্য তেলের ব্যবহার শিশুদের জন্য খুবই উপকারী। মা ও শিশুর পুষ্টির জন্য গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ প্রাণিজ ও উদ্ভিজ খাবার খাওয়াতে হবে।

আরও পড়ুন: ৪ জুন থেকে নগরজুড়ে চারদিনের ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন

তিনি আরও বলেন, মসজিদ, মন্দির বা অন্যান্য উপাসনালয়, হাট-বাজার, বাস স্ট্যান্ড ও নৌ-ঘাটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে মাইকিং করে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের প্রচার-প্রচারণা করা হবে। জাতীয় এই কর্মসূচিকে সফল করতে সরকারি প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি, আনসার-ভিডিপি এবং এনজিও সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারি কর্মকর্তা, মাঠকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক টিম শিশুদেরকে এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কাজে নিয়োজিত থাকবে। চট্টগ্রাম জেলার প্রত্যেক উপজেলায় ইতিপূর্বে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হওয়া সকল জাতীয় কর্মসূচির মতো এই ক্যাম্পেইন বাস্তবায়নের জন্য সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওসিএস ডা. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি, এমওডিসি ডা. মো. নুরুল হায়দায় চৌধুরী ও ডিএসএম (যক্ষ্মা) ডা. প্রমিতি কর্মকার।

জেএন/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!