সালিশি বৈঠকে শারীরিক লাঞ্চনার বিচার চেয়ে ঘুরছেন বিধবা মুনিরা

রাউজান উপজেলার পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মগদাই দলিলুর রহমানের বাড়ির মৃত আইয়ুব আলীর স্ত্রী মুনিরা ইয়াসমিন। তাদের সংসারে দুটি ফুটফুটে মেয়ে রয়েছে। ৭ বছর পূর্বে তার স্বামী মারা যান।

দুই সন্তানকে নিয়ে মুনিরা ইয়াসমিন সেলাই কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। বড় মেয়ে জান্নাতুল নাঈমা আবুর খীল অমিতাভ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মগদাই ইসলামিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ে। বিধবা মুনিরা ইয়াসমিন সেলাই কাজ করার পাশাপাশি পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের কালচারাল পার্কে মহিলাদের সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে সন্তানদের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন।

বুধবার (২০ জুলাই) এলাকার কতিপয় সমাজপতি মুনিরা ইয়াসমিনকে মিথ্য অপবাদ দিয়ে লাঞ্চিত করে। এ ঘটনায় শনিবার (৩০ জুলাই) গ্রাম্য সালিশ ডেকে সমাজপতিরা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে। ওইদিন রাতে মুনিরা ইয়াসমিন রাউজান থানায় উপস্থিত হয়ে লাঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ করেন। পরে রাউজান থানার এসআই নাহিদ সরেজমিনে তদন্ত করেন।

আরও পড়ুন: মুহূর্তেই দাউ দাউ আগুন, শুধু প্রাণটা নিয়ে বের হলেন বিধবা নারী

থানা থেকে ঘটনার বিষয়ে ডাকা হলে সোমবার (১ আগস্ট) বিকাল ৫টায় দুই মেয়েকে নিয়ে রাউজান থানায় উপস্থিত হন। কিন্তু অভিযুক্ত সমাজপতিরা থানায় উপস্থিত হননি। সন্ধ্যার পরে মুনিরা ইয়াসমিন রাউজান থানার ওসিকে বলে বাড়িতে চলে যান। ওইদিন রাতে অভিযুক্তরা থানায় এলেও কোনো বিচার হয়নি। উল্টো দায়ের করা অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য অভিযুক্তরা বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দিয়ে চাপ প্রয়োগ করছেন বলে জানান ভুক্তভোগী মুনিরা ইয়াসমিন।

অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা বিভিন্নভাবে হয়রানি ও অপবাদ দিয়ে মুনিরার পরিবারকে দুর্বিষহ করে তুলছে। সন্তানদের নিয়ে চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন তিনি।

বিচারের জন্য প্রশাসন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি।

এ বিষয়ে রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহাবুউদ্দিন আরিফের কাছে ফোন করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিধবা মুনিরা ইয়াসমিনকে আমি সেলাই মেশিন দিয়েছি। আমার কাছে আসলে তদন্ত করে সঠিক বিচার করে দেবো।

রাউজান থানার ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, বিধবা মুনিরা ইয়াসমিন তাকে লাঞ্চিত করার অভিযোগে থানায় মামলা করেন। অভিযোগের পেক্ষিতে উভয়পক্ষকে থানায় আসতে বলা হয়। মুনিরা থানায় উপস্থিত হলেও যারা মুনিরা ইয়াসমিনকে লাঞ্চিত করেছে তারা আসেনি। মুনিরা চলে যাওয়ার পর অভিযুক্তরা এলেও কোনো বৈঠক হয়নি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।

এসআর/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!