পেশায় ফিরছে কারিগররা, মুষলধারে বৃষ্টির ঢল নেমেছে ছাতার দোকানে

আষাঢ়-শ্রাবণ দুমাস বর্ষাকাল। চলছে আষাঢ় মাস। কখনো থেমে থেমে, আবার কখনো মুষলাধারে হচ্ছে বৃষ্টি। গত কয়েকদিন ধরে নগরে হচ্ছে টানা বৃষ্টি। ঝুম বৃষ্টির এই মৌসুমে কদর বেড়েছে ছাতার। চাহিদা ও বিক্রি দুটোই এখন তুঙ্গে। একইসঙ্গে বেড়েছে ছাতা কারিগরদের ব্যস্ততাও। ছাতার পাশাপাশি বেড়েছে রেইনকোটের চাহিদা ।

বৃষ্টির মৌসুমকে ঘিরে ছাতার দোকানি থেকে শুরু করে কারিগররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। যেন দম ফেলার ফুসরত নেই কারো। পাইকারি-খুচরা সবধরনের ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে ছাতার বিভিন্ন দোকানে। নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ভাসমান ছাতা বিক্রেতা ও কারিগরদের চোখে পড়ছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছাতার দোকানগুলোতে চলছে বেচাকেনা। এছাড়া অনলাইনেও বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ছাতা। তবে ক্রেতারা দোকান থেকেই দেখেশুনে নিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।

সরেজমিন নগরের টেরিবাজার গিয়ে বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, দোকানিরা ব্যস্ত ক্রেতাদের পছন্দের ছাতার দরদাম নিয়ে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এসেছেন ছাতা কিনতে। এছাড়া ছোটরাও এসেছেন তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে পছন্দের ছাতা নিতে। বাচ্চাদের রেইনকোট খুঁজতে দেখা গেলে অনেক অভিভাবককে।

দোকানিরা জানান, বৃষ্টির শুরুর পর থেকে ছাতার চাহিদা বেড়ে গেছে। প্রায় প্রতিদিনই দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। খুচরার পাশাপাশি পাইকারিতে বিক্রি বেড়েছে।

আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ২৫০ জনের প্রাণহানি, কাঁপল ৫০০ কিলোমিটার দূরের ভারত—পাকিস্তানও

বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, দেশি ব্র্যান্ডের পাশাপাশি রয়েছে বিদেশি ব্র্যান্ডের ছাতা। মানভেদে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব ছাতা। এর মধ্যে একভাজের ছাতা ৩৫০-৪০০ টাকা ও দুভাজের ছাতার দাম ২০০-৪৫০ টাকার মধ্যে।

টেরিবাজার আমান আলী টাওয়ারের নিচতলার জিলানী ছাতা বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্রের স্বত্বাধিকারী আবদুর রহমান বলেন, আমাদের নিজস্ব কারখানায় তৈরি ছাতার পাশাপাশি রয়েছে বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ছাতা। একভাজ ও দুভাজ সবরকম ছাতাই আছে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির পর ছাতার চাহিদা বেড়ে গেছে। প্রতিদিনই দোকানে পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাসহ ক্রেতারা ভিড় করছেন। এখন একদামেই ছাতা বিক্রি করা হচ্ছে।

জিলানী ছাতা বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্রের বিক্রয়কর্মী মো. এরশাদ বলেন, বৃষ্টির শুরুর পর থেকে ছাতার চাহিদা বেড়ে গেছে। প্রতিদিন দোকানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় লেগেই আছে। বেচা বাড়ায় এখন দুপুরের খাবার খেতে হচ্ছে সন্ধ্যায়।

দোকানে ছাতা কিনতে আসা চন্দনপুরা এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষিকা নাজনিন আকতার বলেন, আমার জন্য একটা বড় ও মেয়ের জন্য একটা ছোট ছাতা নেব। দেখছি, ডিজাইন ও দামে ভালো লাগলে কিনব। এছাড়া মেয়ের জন্য একটা রেইনকোট নেওয়ারও ইচ্ছা আছে। অনলাইনেও দেখেছি বিভিন্নরকম ছাতা। কিন্তু সরাসরি এসে দেখে নেওয়ার মধ্যে স্বস্তি বেশি। তাই এখানে চলে এলাম।

তিনি আরও বলেন, এখন কখন যে বৃষ্টি আসে তার ঠিক নেই। তাই বাইরে বের হতে হলে অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে ছাতা। এছাড়া গরমের দিনে রোদ থেকে বাঁচতে ছাতার প্রয়োজন হয়।

কথা হয় টেরিবাজার সুপার মার্কেটের সামনে বসা ছাতার কারিগর মো. কামালের সঙ্গে। তিনি বলেন, পুরাতন ও ভেঙে যাওয়া ছাতা মেরামত করতে প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে নারী-পুরুষরা আসছেন। ছাতার অবস্থা দেখে দরদাম করে তারপর কাজ করি। এখন আয় মোটামুটি ভালো। বর্ষা মৌসুম আসলেই ছাতার চাহিদা বাড়লে আমাদের আয়ও বাড়ে। কিন্তু বর্ষা মৌসুম চলেও যাওয়ার পর অন্য পেশা বেছে নিতে হয়।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!