চট্টগ্রামে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে ৩ মামলা—আসামি ১৩০০, ছেলের সঙ্গে আসামি সাবেক মন্ত্রীও

বাঁশখালীতে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের জ্ঞাত-অজ্ঞাত ১ হাজার ৩০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) ঘটনার দিন রাতেই পুলিশ এ মামলা করেছে। এতে বিস্ফোরক আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন, সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, ঘটনার সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৬৩ রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছিল। তিনটি মামলাতেই দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি, বাঁশখালীর সাবেক সংসদ সদস্য সাবেক, সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, তাঁর ছেলে উপজেলা বিএনপির সদস্য মিসকাতুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পাসহ জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন : বাঁশখালীতে খুন—চেয়ারম্যান লিয়াকতসহ ২৭ জনের বিচার শুরু

এ পর্যন্ত পুলিশ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার আসামিরা হচ্ছেন- দক্ষিণ জেলা মহিলা দল সভাপতি জান্নাতুল নাঈম চৌধুরী রিকু, বাঁশখালী পৌরসভা মহিলা দলের আহ্বায়ক সারাবান তাহুরা কলি, মো. পারভেজ, ইমরান, জোবায়ের, দেলোয়ার হোসেন, আব্দুর রহিম ও মো. তারেক। মামলার পর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা গা ঢাকা দিয়েছে।

শনিবার (২৭ আগস্ট) এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত পুলিশ সর্বত্র সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে। বাঁশখালীতে বিএনপি নেতা জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তিনটি মামলা হওয়ায় ঘটনাটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। কেননা বিএনপি ক্ষমতা হারানোর পর থেকে বাঁশখালীতে থানা, মন্দির ও আদালতে হামলাসহ বেশ কয়েকটি নাশকতার ঘটনা ঘটলেও এসবের বিরুদ্ধে কখনো মামলা হয়নি।

বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি বলেন, পুলিশের ওপর হামলাকারী বিএনপির দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে রোববার (২৮ আগস্ট) আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হবে। বাঁশখালীতে বিএনপির দুপক্ষের কোন্দল ঠেকাতে পুলিশ নিরাপত্তা দিতে গেলে সেখানে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা করে।

এদিকে বিএনপির দক্ষিণ জেলা সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পুলিশের সঙ্গে বিএনপির কোনো শত্রুতা নেই। একটি চক্র পুলিশের ওপর ঢিল ছুঁড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ফাঁসিয়েছে। শুনেছি আমি ও আমার ছেলের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। কই আমিতো ঘটনার ৫শ গজ দূরে ছিলাম।

যোগাযোগ করা হলে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, পুলিশের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাঁশখালীর শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অস্থিতিশীল করলে কেউ রক্ষা পাবে না। দুষ্কৃতিকারীদের ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৬ আগস্ট) বিকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির একপর্যায়ে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ বাধে। এতে এএসপি (সার্কেল), ওসিসহ ১১ পুলিশ সদস্যের সঙ্গে মোট ২৮ জন আহত হন।

ইউবি/এসআর

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!