পানিতে ভাসছে চট্টগ্রাম, তুমুল বৃষ্টিতে বাড়ছে পাহাড়ধসের ভয়

চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় ২১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একইসঙ্গে পাহাড়ধসের সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে।

এদিকে টানা তিনদিনের বর্ষণে নগরজুড়ে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। পানিবন্দী নিম্ন এলাকার বাসিন্দারা।  পাহাড়ি এলাকায় বসবাসরত মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।

শনিবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে নগরের আকবরশাহ থানার বিজয়নগর ও ঝিল পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত প্রায় ২৫০ পরিবারকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এ বিষয়ে নগরের কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) উমর ফারুক আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার মজুদ রয়েছে। অনেকে ঘর ছেড়ে আসতে চাচ্ছেন না। আবার অনেকে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় উঠেছেন।

আরও পড়ুন : চট্টগ্রামজুড়ে ভয়াবহ জলজট, চউকের ঘাড়েই দায় চাপাচ্ছে চসিক

অন্যদিকে নগরের বহদ্দারহাট, বাদুরতলা, শুলকবহর, মোহাম্মদপুর, কাপাসগোলা, চকবাজার, বাকলিয়ার বিভিন্ন এলাকা, ফিরিঙ্গিবাজারের একাংশ, কাতালগঞ্জ, শান্তিবাগ আবাসিক এলাকা, কে বি আমান আলী রোড, চান্দগাঁওয়ের শমসেরপাড়া, ফরিদারপাড়া, পাঠাইন্যাগোদা, মুন্সীপুকুর পাড়, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, তিন পুলের মাথা, রিয়াজউদ্দিন বাজার, মুরাদপুর এবং হালিশহরের বিভিন্ন এলাকার সড়ক ও অলিগলিতে জমে রয়েছে পানি। ফলে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষেরা।

এছাড়া রাস্তায় পানি জমে থাকায় অনেক এলাকায়  গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বাধ্য হয়ে কেউ বেশি ভাড়ায় এবং কেউ শেয়ারে রিকশা নিয়ে ছুটছেন গন্তব্যে।

সৈকত ভৌমিক নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, বর্ষার আগে উন্নয়নের বার্তা ছুঁড়েছে সেবা সংস্থাগুলো। কিন্তু দুই-তিন দিনের বৃষ্টিতে বন্দরনগরী ডুবেছে জলাবদ্ধতায়। পানিও নামছে না।

তিনি আরও বলেন, গৃহকর থেকে শুরু করে ভ্যাট, ইনকাম ট্যাক্স কোনোটিতেই আমাদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে জলাবদ্ধতার কষ্ট মেনে নিচ্ছি বলে সাধারণ মানুষের সহনশীলতা সেবা সংস্থাগুলোর শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রিকশা যাত্রী নুরুল আমিন বলেন, মেয়রও এখন পানিবন্দী। রিকশায় চড়ে বাসায় যাচ্ছেন। এরপরও জলাবদ্ধতা নিয়ে ফলপ্রসূ কোনো কাজ চট্টগ্রামবাসীকে দেখাতে পারেননি তিনি।

এদিকে সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, বর্ষা এবং মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে মঙ্গলবার পর্যন্ত বজ্রপাতসহ ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও নদীবন্দরগুলোকে নৌ চলাচলে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, ভারী বর্ষণের কারণে পাহাড়ধসেরও সম্ভাবনা রয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে পতেঙ্গা আবহাওয়া কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আজ (রোববার) সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড রয়েছে। আরও দুই থেকে তিনদিন ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেওয়া হয়েছে।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!