তদন্তের চোখ—সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কে যা বলল

সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট পরিদর্শনে করেছে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি।

রোববার (৫ মার্চ) সকালে ঘটনাস্থলে আসেন তদন্ত টিমের সদস্যরা।

জানা গেছে, সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে পর্যাপ্ত অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল কিনা সে বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। তবে প্রাথমিকভাবে তাদের ধারণা, অক্সিজেন প্ল্যান্টের কলামে ওভার পেশারের কারণে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে।

ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল হামিদ মিয়া বলেন, আজ ভোর ৬টা থেকে চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ ও কুমিরাসহ দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে অবস্থান করে। দুর্ঘটনার পর আমরা ঘটনাস্থলে এসে বেশকিছু ফায়ার এস্টেঙ্গুইসার দেখতে পেয়েছি। তবে তা পর্যাপ্ত ছিল কিনা আমরা নিশ্চিত নয় এখনও।

তিনি বলেন, সীমা অক্সিজেনের ফায়ার লাইসেন্স ছিল। তবে তারা ফায়ার সেফটি প্ল্যান বাস্তবায়ন করেনি। সেফটি প্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য তারা আবেদন করেছিলেন। অক্সিজেন সিলিন্ডার ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে একটি গাইডলাইন মেনে চলতে হয়। আর সেটি মেনেছে বলে মনে হচ্ছে না। এ বিষয়টি বিস্ফোরক অধিদপ্তর ভালো বলতে পারবে।

এদিকে আজ সকালে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেনও ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন।

এসময় তিনি বলেন, এসব নিয়ে আমরা বিশ্লেষণ করে দেখব। এরপর আমাদের প্রতিবেদন জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে পাঠাব।

সরেজমিনে দেখা যায়, অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। আশপাশের অনেক প্রতিষ্ঠানও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এইচ স্টিল রি রোলিং মিল, রুবাইয়া অক্সিজেন লিমিটেড, রুবইয়া ভেজিটেবল অয়েল ও রুবাইয়া প্লাস্টিকসহ চার প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মো. ওমর ফারুক বলেন, সীমা অক্সিজেন প্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণে আমাদের চার প্রতিষ্ঠানের ১০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের ম্যানেজার মো. আবদুল আলীম বলেন, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ, বিস্ফোরক অধিদপ্তর ও ইউনিয়নের সার্টিফিকেটও রয়েছে আমাদের কাছে । এমন ঘটনা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু কূভাবে হয়েছে তা বুঝতে পারছি না। এক সপ্তাহ আগেও এখানে চায়নাদের একটি টিম ডিজিট করে গেছেন। সবকিছু সুন্দরভাবেই চলছিল।

তিনি আরও বলেন, তদন্তের পর জানা যাবে এ ঘটনা কীভাবে হয়েছে।

এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড তদন্ত কমিটির সদস্য ও সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অক্সিজেন প্ল্যান্টের কলামে ওভার পেশারের কারণেই এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে আগামীকাল সোমবারও তদন্ত করা হবে।

প্রসঙ্গত, সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় ২৮ জন হতাহত হন। এর মধ্যে ৬ জন নিহত হয়েছেন এবং বাকি ২২ জন আহত। তাদের মধ্যে ২ জন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন। অন্য ২০ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ( চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এসএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!