জীবনটা জেলেই কাটিয়ে দিতে হবে ওসি প্রদীপ—চুমকিকে

জীবনটা জেলেই কাটিয়ে দিতে হবে সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তাঁর স্ত্রী চুমকি কারনকে। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় প্রদীপকে ২০ বছর ও চুমকিকে ২১ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে সম্পদ বাজেয়াপ্তসহ ৪ কোটি ২১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বুধবার (২৭ জুলাই) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদের আদালত শুনানি শেষে মামলার রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক।

এর আগে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপকে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৩ অগাস্ট তিন কোটি ৯৫ লাখ পাঁচ হাজার ৬৩৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন। মামলা তদন্তের পর ২০২১ সালের ২৮ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তিনি। একই বছরের ১ সেপ্টেম্বর শুনানি শেষে আসামি প্রদীপের উপস্থিতিতে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত।

অভিযোগপত্রে সম্পদ বিবরণীতে ৪৯ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য দেওয়া ও ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়।

সাবেক ওসি প্রদীপ ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ গোপন করতে নগরের কোতোয়ালী থানাধীন পাথরঘাটা এলাকায় শ্বশুরের নামে একটি ছয়তলা বাড়ি নির্মাণ করেন। পরে প্রদীপের শ্বশুর চুমকির নামে বাড়িটি দান করেন। দানপত্র দলিল হলেও বাড়িটি প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রী চুমকির অর্থে অর্জিত বলে তদন্তে উঠে আসে।

মামলা তদন্তে আরও জানা যায়, প্রদীপ তার স্ত্রীকে কমিশন ব্যবসায়ী ও মৎস্য ব্যবসায়ী সাজিয়ে অবৈধ সম্পদ বৈধ করার চেষ্টা করেছেন। আয়কর রিটার্নে চুমকির কমিশন ব্যবসাসহ বোয়ালখালী উপজেলায় ১০ বছরের জন্য লিজ নেওয়া ৫টি পুকুরে মাছের ব্যবসার আয় দেখানো হয়েছে। এসব ভুয়া ব্যবসা দেখানো হয়েছে প্রদীপের অপরাধলব্ধ অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে।

অভিযোগপত্রে উল্লেখিত সম্পদগুলো হলো- নগরের পাথরঘাটায় একটি ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরে সেমিপাকা ঘর, ৪৫ ভরি সোনার গয়না, একটি কার ও একটি মাইক্রোবাস, ব্যাংক হিসাব এবং কক্সবাজারে চুমকির নামে একটি ফ্ল্যাট।

আরএস/এসআই

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!