চট্টগ্রামে রাতের আঁধারে পাহাড় কেটে প্লট বানাচ্ছে ‘কলা কালাম’

কোনো কালে কলার ব্যবসা না করলেও তবুও তাঁর নাম ‘কলা কালাম’। পুরো নাম মো. কালাম। দিনের কলা কালামের অন্য রূপ দেখা যায় রাতে! রাতের আঁধারে তিনি হয়ে উঠেন ভয়ঙ্কর, নির্বিচারে কাটেন পাহাড়। তাঁর ক্ষমতার কাছে যেন অসহায় স্থানীয় প্রশাসনও। একের পর এক পাহাড় কাটলেও জানে না পরিবেশ অধিদপ্তরও। জানে না, বন বিভাগও।

স্থানীয় লোকজন জানান, বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে রয়েছে তার সখ্যতা। তাদের নীরবতায় কলা কালাম রাতে কাটছে পাহাড় আর গাছ, দিনে বানাচ্ছে প্লট।

চট্টগ্রাম নগরের আকবরশাহ ধানার শাপলা আবাসিকের গ্যাস সিলিন্ডার এলাকার মো. কালাম প্রকাশ কলা কালামের বসবাস। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও থেমে নেই প্রকাশ্যে পাহাড় কাটা। তবে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের আকবরশাহ থানা পুলিশ বলছেন, তার বিরুদ্ধে পরিবেশে যে কটি মামলা রয়েছে, তা জামিনে আছে কালাম।

অভিযোগের সূত্র ধরে সরেজমিন দেখা যায়, আকবরশাহের মূল সড়ক হয়ে সিডিএ রেললাইন পার হয়ে হাতের বাম পাশে শাপলা আবাসিক এলাকার প্রবেশ পথ। সেই সড়ক ধরে এগোতেই দেখা মিলবে গ্যাস সিলিন্ডার নামক স্থানের। রাস্তার শেষ প্রান্তে রয়েছে সীমানা পিলার। এর পরের স্থান অনেকটা দুর্গম। সীমানা পিলার পার হয়ে হাতের ডানদিকে একটি রাস্তা উঠে গেছে পাহাড়ি এলাকায়। এরপর দেখা মিলবে পাহাড় কাটার সেই স্থান।

আরও দেখা যায়, পাহাড় কাটা প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন চলছে প্লটের সীমানা নির্ধারণের কাজ। দেওয়া হয়েছে ইটের গাঁথুনি। সেখানে দেখা মিলল রাশেদা আক্তার নামের এক স্থানীয় নারীর। তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, কলা কালাম পাহাড় কাটেন রাতের আঁধারে। এখন চলবে বেচাবিক্রি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, এই এলাকা কিছুটা দুর্গম। ফলে পুলিশ ও পরিবেশ অধিদপ্ততরের কেউ আসে না। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কলা কালাম দিনের পর দিন এমন অপকর্ম করছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কলা কালাম রেগে যান। তিনি প্রতিবেদককে প্রশ্ন করেন, ‘পাহাড় কেটেছি তাতে আপনার কি? এর আগেও অনেক পাহাড় কেটেছি। তখন কোথায় ছিলেন।’ বলেই মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন কালাম।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলীর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জহিরুল আলম জসীম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, পাহাড় কাটা অপরাধ। পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। আগামীকাল (বুধবার) এই পাহাড়খেকোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

আরএন/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!