চট্টগ্রামে বাড়ছে ডেঙ্গু, মৃত্যু বেশি নারী-শিশুর

চট্টগ্রাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যু। তবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে নারী ও শিশুর। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৬৫ জন রোগী। এদের মধ্যে শিশু ২৪ জন, নারী ২৫ জন এবং পুরুষ ১৬ জন।

শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও দুজনের৷ এর মধ্যে রোকেয়া বেগম (৪০) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এছাড়া ফাহিমা আক্তার নামে দুবছরের এক শিশুও মারা গেছে। সে গত ১৩ সেপ্টেম্বর অ্যাপোলো ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

এছাড়া গেল ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১২৪ জন। এর মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ৬০ জন এবং বেসরকারি হাসপাতালে ৬৪ জন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ৬৭৭ জন। শুধু চলতি সেপ্টেম্বরেই শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৮৯০ জন।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে৷

আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে ৫০ মৃত্যু, লাফিয়ে বাড়ছে রোগী—অসহায় সিটি করপোরেশন

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে গত তিন মাসে। এর মধ্যে আগস্টে মৃত্যু সবচেয়ে বেশি। এ মাসে মোট ২৮ জনের মৃত্যু হয়। এর আগে জুলাইয়ে মৃত্যু হয় ১৬ জনের। আর চলতি সেপ্টেম্বরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১২ জন প্রাণ হারিয়েছে।

নগরের পাশাপাশি উপজেলায়ও ডেঙ্গু ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে৷ চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলায় এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৩৫২ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৮৭৭ জন রোগী সীতাকুণ্ডে৷ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মহানগরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ২০১ জন।

তবে চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি হলেও মৃত্যু বেশি নারী ও শিশুর। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ৩ হাজার ৪৬৪ জন, নারী ২ হাজার ১২২ জন এবং শিশু ১ হাজার ৯৬৭ জন।

এদিকে সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালেও বেড়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চাপ। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পর চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে রোগীর চাপ সবচেয়ে বেশি।

অন্যদিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বাড়ায় গুরুত্বপূর্ণ ডিএনসি স্যালাইনের কৃত্রিম সংকটে ভুগছে রোগী ও স্বজনরা। অভিযানে থামছে না সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ডেঙ্গুতে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে৷। শক সিনড্রোম ও হেমারেজিক অবস্থা মৃত্যুর অন্যতম কারণ। যাদের মালটি অর্গান ডিসফাংশন থাকে তাদের ঝুঁকি বেশি৷

সিভিল সার্জন আরও বলেন, অনেকের জ্বর হলে ডেঙ্গু টেস্ট করান না। বাসায় চিকিৎসায় থাকে। পরে যখন প্লাটিলেট কমে জটিল আকার ধারণ করে তখন হাসপাতালে ছুটে৷ কাজেই ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

এআইটি/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!