চট্টগ্রামে বাজারজুড়ে মধুমাসের ফলের রাজত্ব

মধুমাস খ্যাত জ্যৈষ্ঠ মাসে তীব্র তাপদাহ নিয়ে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে রাজ করছে গ্রীষ্মকাল। গ্রীষ্মের এই আধিপত্যের মাঝে চট্টগ্রামের বাজার ছেয়ে গেছে গ্রীষ্মকালীন নানান সুস্বাদু ফলে।

আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম, আনারসসহ বাহারি ফলের বিক্রি বেড়েছে চট্টগ্রামের ফলের বাজারগুলোতে। এসব ফলের সরবরাহ বাজারে বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম কিছুটা কমেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিন নগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ফলের দোকানগুলোতে স্তরে স্তরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে নানান আকারের কাঁঠাল। দোকানের বাইরে উন্মুক্ত জায়গা ও ফুটপাতে রয়েছে কাঁঠালের বিশাল বিশাল স্তূপ। জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ ভাগে এসে বাজারে সরবরাহ বেড়েছে এই ফলের। আকার ও মান ভেদে খুচরা বাজারে প্রতিটি কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।

সাধারণত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে জুন মাসজুড়ে বাজারে আধিপত্য থাকে লিচুর। চলতি জুনের প্রথম ভাগে বাজারে নানান জাতের লিচুর সরবরাহ বেড়েছে। এর ফলে রসাল এই ফলের দাম কিছুটা কমেছে। বড় আকারের লিচু একশ’ পিস বিক্রি হচ্ছে ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ টাকা পর্যন্ত।

সপ্তাহখানেক আগেও এ দর ছিল সাড়ে ৩শ থেকে সাড়ে ৪শ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া তুলনামূলকভাবে ছোট আকারের লিচু প্রতি একশ পিস বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা থেকে ২৮০ টাকায়। যা কয়েকদিন আগেও ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে স্কুল-কলেজ ঘিরে শরবতের রমরমা বাণিজ্য, হাসপাতালে ভিড়

এদিকে ল্যাংড়া, হিমসাগর, লক্ষ্ণণভোগসহ নানান জাতের আমের সরবরাহ বেড়েছে চট্টগ্রামের বাজারে। জ্যৈষ্ঠের শুরুর দিকে আমের দাম চড়া থাকলেও মাসের শেষ ভাগে এসে দাম অনেকটা কমে এসেছে।

ল্যাংড়া আম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকায়। ডবল বি বিক্রি ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা এবং লক্ষ্মণভোগ ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরু দিকেও এসব কেজিপ্রতি ১শ থেকে দেড়শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছিল।

এদিকে বাজারে আনারসের সরবরাহও ব্যাপক হারে বেড়েছে। তবে গরমে আনারসের চাহিদা বেশি থাকে বলে সরবরাহ বাড়লেও দামে তেমন প্রভাব পড়েনি। সুস্বাদু এ ফল আকার ও মানভেদে বিক্রি হচ্ছে জোড়া ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া বাজারে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন জাতের জাম। মান ও আকারভেদে জাম বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৬০ থেকে টাকা থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত।

মাসের শুরুতে বেতন পেয়ে বিভিন্ন রকমের ফল কিনতে চকবাজার এসেছেন একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের কর্মী মো. রাশেদ। তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, গত মাস থেকেই বিভিন্ন গ্রীষ্মকালীন ফল বাজার আসা শুরু করলেও তখন দাম বেশি ছিল। এখন বাজারে এসব ফলের সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। তাই বেতন পাওয়ার সাথে সাথে বাচ্চাদের জন্য লিচু, আম আর কাঁঠাল কিনলাম।

যোগাযোগ করা হলে বহদ্দারহাট এলাকার ফল ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমি রাজশাহী থেকে আম এবং মানিকছড়ি থেকে লিচু ও কাঁঠাল এনে বহদ্দারহাটে বিক্রি করি। বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফলের সরবরাহ বেড়েছে তাই দাম গত মাসের তুলনায় কিছুটা কমেছে। এছাড়া এসব ফলের দাম রোদ-বৃষ্টির ওপরও নির্ভর করে। বৃষ্টি পড়লে মানুষ কাঁঠাল খেতে চায়, তাই চাহিদা বেশি থাকার কারণে দামও এসময় বেশি থাকে। আবার গরম বেশি পড়লে মানুষ তেমন কাঁঠাল খেতে চায় না, তাই দামও কমে যায়।

তিনি বলেন, আনারসের ক্ষেত্রে এর উল্টো। বৃষ্টি পড়লে আনারসের দাম কমে, গরম পড়লে আনারসের দাম বাড়ে। তাই বর্তমানে আনারসের দাম অন্যান্য ফলের তুলনায় এখনো তেমন কমেনি। বর্তমানে লিচুর ভরা মৌসুম চলছে। এ মাসের শেষের দিকে বাজারে লিচুর সরবরাহ কমলে দাম অনেক বেড়েয যাবে।

জেএন/এসআই

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!